রফিক সাহেব ভীষন বুকে ব্যাথা নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার সাহেব ইসিজিসহ আরো নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন, নাহ আপনার বুকে কোন ব্যামো নেই। তবে তিনি তাকে একটা এমআরআই করতে বললেন। বুকের ব্যাথা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপ্ন হওয়া রফিক সাহেবের ঠিক সেই মূহুর্তে মনে হলো ডাক্তার সাহেব তাকে অহেতুক বাড়তি টেস্টের খপ্পরে ফেলছেন। তবুও খানিকটা দ্বিধা-সংশয় নিয়ে তিনি টেস্টটা করেই ফেললেন। আর টেস্টটা করেই জানতে পারেলন তিনি সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসে আক্রান্ত। অর্থ্যাৎ তার বুকের ব্যাথার উৎসের কারণ ঘাড়ে। এমন অনেক রোগী আছেন যারা ঘাড়ের রোগে আক্রান্ত কিন্তু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অন্যভাবে।
সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস কী
আমাদের মেরুদেণ্ডর ওপরের অংশের সাতটি কশেরুকা, কশেরুকার মধ্যবর্তী চাকতি, মাংসপেশি, লিগামেন্ট ও স্নায়ু জালিকা নিয়ে ঘাড় গঠিত। স্নায়ু জালিকাটি থেকে স্নায়ুসমূহ দুই হাত, বুক, পিঠ ও মাথার কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়ে। কশেরুকা বা কশেরুকার মধ্যবর্তী চাকতির আকার বা অবস্থান পরিবর্তনের ফলে স্নায়ুর গোড়ায় চাপ সৃষ্টি হলেই স্নায়ুর ছড়িয়ে পড়া যে কোনো অংশে অস্বস্তি অনুভূতি বা ব্যথা হতে পারে। এটি নির্ভর করে কতো নম্বর স্নায়ুটি আক্রান্ত তার উপর। ঘাড়ের ৫ নম্বর স্নায়ুটি যদি চাপে পড়ে থাকে তাহলে ব্যথা হাতের কুনুই পর্যন্ত যেতে পারে; এমনিভাবে বুকে ব্যথার জন্য ৮ নম্বর স্নায়ুকে দায়ী করা যায়।
রোগ নির্ণয়
শারীরিক পরীক্ষার সঙ্গে এমআরআই করালে কশেরুকা, চাকতি ও স্নায়ুসমূহের স্বচ্ছ চিত্র পাওয়া যায়। আর্থিক দুর্বলতা থাকলে এক্সরে। ব্যথার উৎপত্তি স্থলকে সুনির্দিষ্ট করার পর চিকিৎসা প্রস্তুতি নিতে হবে।
চিকিৎসা
অবশ্যই যে কোনো শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কোন অবস্থাতেই কারো পরামর্শ অথবা অভিজ্ঞতার আলোেক চিকিৎসা চেষ্টা না করাই ভালো। তবে এই ধরেণর ব্যাথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা ফিজিওথেরাপি নেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম মেনে চলা আর বিজ্ঞানসম্মত ব্যায়াম করেল ব্যাথা নিরাময় সম্ভব। কমপেক্ষ টানা তিনদিন বিশ্রাম নিতে পারলে ভালো। ঘাড় ব্যথার রোগীরা পাতলা বালিশ ও নরম বিছানায় ঘুমানো উচিত।