Saturday, April 20, 2024
More

    সর্বশেষ

    ক্যারিয়ার শুরুর আগে যা যা জানা প্রয়োজন

    সহজভাবে বলতে গেলে ক্যারিয়ার মানে কর্মজীবন। ভালো চাকরি কিংবা ব্যাবসা আমাদের দেশে সবথেকে বেশি গ্রহণযোগ্য ক্যারিয়ার অপশন। ইদানীং তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফ্রিল্যান্সিং কিংবা উদ্যোক্তা হওয়ার ঝোঁকও। তবে শুধুমাত্র ব্যক্তির পেশাই তার ক্যারিয়ার নয়, এটি হচ্ছে ক্যারিয়ারের প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে বুঝে-শুনে ও সতর্কতার সাথে পেশা নির্বাচন করা জরুরি।

    ক্যারিয়ার গঠনের উদ্দেশ্যে পেশা নির্বাচনের প্রাথমিক ধাপ শুরু হয় ছাত্রজীবনেই। যদিও আমাদের দেশের চিত্রে শিক্ষার্থীকে নিজের পছন্দের বিষয় বেছে নেওয়ার চেয়ে পারিবারিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণে সেরা এমন বিষয়ই বেছে নিতে দেখা যায় বেশি। আর সেদিক থেকে প্রথমেই থাকে বিজ্ঞান বিভাগ। এক্ষেত্রে পড়াশোনা শেষে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গঠন বেশি গুরুত্ব পায়। তাছাড়া দেখা যায় বিবিএ-এমবিএ, আইন, ইংরেজি, লোক প্রশাসন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি গুরুত্ব পায়।

    ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছা বা যে কাজে আপনি দক্ষ সেটাকে প্রাধান্য দেওয়াই বেশি ভালো। আর নিজের পছন্দের কোনো বিষয় যদি না থেকে থাকে সেক্ষেত্রে চাকরির বাজার মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। 

    এর পাশাপাশি কিছু সাধারণ বিষয়েও দক্ষতা অর্জন করা জরুরি যা যেকোনো পেশাতেই কাজে লাগে। আর এই প্রস্তুতি আপনি অনেক আগে থেকেই নেওয়া শুরু করতে পারেন। এই প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন–

    ভাষাগত দক্ষতা অর্জন:

    জন্মগতভাবে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা বলেই যে এই ভাষার প্রতি আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেবো না ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়। সঠিক ও সুন্দর উচ্চারণে কথা বলতে পারা একপ্রকার দক্ষতা। যা চাকরি, ব্যাবসায় বা যেকোনো পেশাতেই খুব কাজে লাগে। তাই সঠিক উচ্চারণ, ভাষার সুন্দর ব্যবহার, ব্যাকরণ ইত্যাদি জানাও জরুরি। একইভাবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাও আপনার জন্য খুবই জরুরি। ইংরেজির দক্ষতা আপনাকে অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখবে। তাই বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হওয়াটা চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য খুবই জরুরি। এর পাশাপাশি যারা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান তাদের জন্য বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি আরো একটি ভাষা শিখে নেওয়াটা ক্যারিয়ার দৌড়ের জন্য লাভজনক। বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি তৃতীয় কোনো ভাষা হিসেবে চাইনিজ, জাপানিজ, ফ্রেঞ্চ, জার্মান কিংবা স্প্যানিশ শিখে নেওয়া যেতে পারে।

    কম্পিউটার বিষয়ক দক্ষতা:

    বর্তমানে প্রায় সব কর্মক্ষেত্রেই ম্যানুয়াল ডকুমেন্টেশন বাদ দিয়ে কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েছে। কম্পিউটারের ব্যবহার কাজের গতি বৃদ্ধি করে, সময়ও বাঁচায়। তাই ছোটো-বড়ো অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই এখন কম্পিউটার নির্ভর। অফিসিয়াল যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো ই-মেইল। ই-মেইল পাঠানো, তাতে ডকুমেন্ট এটাচ করা, সিসি, বিসিসি ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক জ্ঞান থাকা জরুরি। এছাড়াও মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ার পয়েন্ট–কমপক্ষে এই তিনটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতেই হবে। নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে টাইপ করা, হিসাব রাখা, ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রেজেন্টেশন তৈরি করা–এসব বিষয়েও দক্ষ হতে হবে।

    প্রশিক্ষণ গ্রহণ:

    যেকোনো বিষয়েই দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ অনেক বেশি কাজে দেয়। তাই আপনার আগ্রহের বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। এতে ওই বিষয়ে আগে জানা না থাকলে নতুনভাবে জানতে পারবেন বা জেনে থাকলেও সেটা আরো ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবেন। ক্যারিয়ার স্টার্ট-আপ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ক্যারিয়ার ফেস্ট, সেমিনার, টাইম ম্যানেজমেন্ট, লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট, উইনিং ইন্টারভিউ, মাইক্রোসফট অফিস প্রোগ্রাম-সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণে সময় সুযোগ করে অংশ নিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনেও অনেক ভালো প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ আছে। ঘরে বসে সেটাকেও কাজে লাগাতে পারেন।

    এক্সট্রা-কারিকুলার একটিভিটি:

    অনেকেই এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিতে গুরুত্ব দেয় না বা এতে সময় দেওয়াকে সময়ের অপচয় হিসেবে দেখে। তবে বাস্তব জীবনে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি আপনাকে অনেকভাবে দক্ষ হতে সাহায্য করে। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বিভিন্ন ক্লাব বা সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকে তাদেরকেই ক্যারিয়ারের শুরুতেই অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখা যায়। এসব ক্লাব বা সংগঠন করার কারণে মানুষের সাথে যোগাযোগ দক্ষতা তৈরি হয়, নেতৃত্বের গুণাবলি প্রকাশিত হয় এবং কাজের সুযোগও বেশি পাওয়া যায়। তাই এখনো যদি কোনো সংগঠনের সাথে যুক্ত না থাকেন তবে শুরু করতে পারেন।

    নেটওয়ার্ক তৈরি করা:

    ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আপনি যদি চাকরি করতে আগ্রহী হন তবে চাকরি পেতে সহযোগিতা করবে, আপনি যদি ব্যাবসায়ে আগ্রহী হন ব্যাবসা বাড়াতে সহযোগিতা করবে নেটওয়ার্কিং। সর্বোপরি নেটওয়ার্কিং আপনার দেখার পরিধি বাড়াবে, জানার পরিধি বাড়াবে। ফলে ক্যারিয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং থাকা একজন মানুষ সবসময়ই বাড়তি সুবিধা পায়।

    সর্বশেষ

    পড়েছেন তো?

    Stay in touch

    To be updated with all the latest news, offers and special announcements.