অ্যান্টি-সাইবার বুলিং অ্যাপ ‘‘সাইবার টিনস’’ বানিয়ে শিশুদের ‘নোবেল’ জিতলো বাংলাদেশি সাদাত রহমান। ১৭ বছর বয়সী এ কিশোরের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল জেলায়। শিশু অধিকার নিয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করে নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা।
১৩ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসে আয়েজিত এক অনুষ্ঠানে তাকে পুরস্কৃত করা হয়। করোনার কারণে অনুষ্ঠানটি ছোট পরিসরে হলেও অনলাইনে সম্প্রচারের মাধ্যমে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়। সাইবারবুলিং বা অনলাইনে হয়রানি বন্ধে অবদান রাখায় আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশি কিশোর সাদাত রহমান। মূলত সাইবারবুলিং প্রতিরোধী অ্যাপ তৈরি এবং এর মাধ্যমে মানুষজনকে অনলাইনে হয়রানির বিষয়ে সচেতন করার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মানজনক এ পুরস্কার পায়।
সাদাত রহমানের তৈরি অ্যাপের নাম ‘‘সাইবার টিনস’’। এর মাধ্যমে পরিচয় গোপন রেখে একদল স্বেচ্ছাসেবকের কাছে অনলাইনে হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ জানানো যায়। পরে ওই স্বেচ্ছাসেবকরাই প্রয়োজনবোধে পুলিশ বা সমাজকর্মীদের কাছে যান। এ ছাড়া কিশোর-কিশোরীদের অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়ে শিক্ষা দেয় এই অ্যাপ। আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারজয়ী সাদাত দীর্ঘ দিন ধরে সাইবার বুলিং ও সাইবার অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা ও সচেতনতা নিয়ে কাজ করছে। সাদাতের তৈরি মোবাইল অ্যাপটি দিয়ে অনলাইনে সাইবার হয়রানীর অভিযোগ বা তথ্য জানানো যায়। বর্তমানে ১৮০০-এরও বেশি কিশোর-কিশোরী এই অ্যাপটি ব্যবহার করছে। তার এই অ্যাপের মাধ্যমে ৩০০ জনেরও বেশি শিশু-কিশোর-তরুণ ভুক্তভোগী সহযোগিতা পেয়েছে। এছাড়া এর সূত্র ধরে ৮ জন অপরাধী গ্রেপ্তার হয়েছে।
সাদাত রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারে অর্থমূল্য হিসেবে এক লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক কোটি টাকা)। এই অর্থ সাইবারবুলিং-রোধী অ্যাপটি বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে দেয়ার কাজে খরচ করা হবে। সাইবারবুলিংয়ের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে একপ্রকার যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধের আমি এক সৈন্য। সবাই এভাবে সমর্থন দিলে আমরা একসঙ্গে সাইবারবুলিংয়ের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ জয়ী হবো।
বাংলাদেশের কিশোর সাদাত রহমান সাদাত সিআরআই কর্তৃক আয়োজিত ‘জয় বাংলা ইউথ অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ী। শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নাজুক অবস্থায় থাকা শিশুদের সুরক্ষায় কাজের জন্য প্রতি বছর এই পুরস্কার দেয় কিডস রাইটস নামের একটি সংগঠন। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিডস রাইটসের বিশেষজ্ঞ কমিটি ৪২টি দেশের ১৪২ জন প্রতিযোগীর মধ্যে সাদাতকে এ বছরের পুরস্কারের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এই পুরস্কার অর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম পেলেন, যা তাকে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ করে দিবে বলে জানায় কিডস রাইটস।