ক.বি.ডেস্ক: সিইএস ২০২২ এ নিজেদের লক্ষ্য উন্মোচন করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। ভবিষ্যত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হচ্ছে ‘‘টুগেদার ফর টুমরো’’। স্যামসাংয়ের ভাইস-চেয়ারম্যান জং-হি অনুষ্ঠানে মূলবক্তা হিসেবে ক্রেতাদের পরিবর্তনশীল জীবনধারা ও উদ্ভাবনে কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতার ওপর জোর দেন। পাশাপাশি, তিনি একসঙ্গে নতুন দিনের সূচনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রচেষ্টার বিষয়ে আলোকপাত করেন। প্রতিষ্ঠানটির টুগেদার ফর টুমরো লক্ষ্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং বিশ্বের গুরুতর কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অংশীদারিত্ব উতসাহিত করার মাধ্যমে সবাইকে উতসাহিত করবে।
এভরিডে সাসটেইনিবিলিটি এ বিশ্বাসের ভিত্তিতেই স্যামসাং ভবিষ্যতের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আর এভরিডে সাসটেইবিলিটির ধারণাই স্যামসাংকে নিজেদের সবকিছুর কেন্দ্রে সাসটেইনিবিলিটিকে রাখতে উতসাহিত করে। নিজেদের পণ্য উতপাদনের নানা ধাপে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে স্যামসাংর প্রচেষ্টা ইতোমধ্যেই কার্বন পদচিহ্ন নিয়ে কাজ করা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কর্তৃপক্ষ কার্বন ট্রাস্টের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। গত বছর, প্রতিষ্ঠানটির কার্বন ট্রাস্ট সনদপ্রাপ্ত মেমোরি চিপ আনুমানিক প্রায় ৭ লাখ টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সহায়তা করেছে।
স্যামসাং সেমিকন্ডাক্টরের বাইরেও নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে পুন:ব্যবহারযোগ্য পণ্য। স্যামসাং ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লে বিজনেস ২০২১ সালের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি রিসাইকেলড প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটি আগামী তিন বছরে এর সকল মোবাইল পণ্য ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সে পুন:ব্যবহারযোগ্য ম্যাটেরিয়াল বিস্তৃত করার পরিকল্পনার ব্যাপারে জানিয়েছে। ২০২১ সালে স্যামসাংর সকল টিভি বক্সে পুন:ব্যবহারযোগ্য উপকরণ যুক্ত করা হয়। এ বছর বক্সের ইন্টেরিয়র প্যাকেজিংয়েও পুন:ব্যবহারযোগ্য উপকরণ ব্যবহার করা হবে। এখন, স্টাইরোফোম, বক্স হোল্ডার ও প্লাস্টিক ব্যাগেও পুন:ব্যবহারযোগ্য উপকরণ যুক্ত করা হবে।এ প্রোগ্রামের সম্প্রসারণ কার্ডবোর্ড বাক্সকে ক্যাট হাউজ, স্লাইড টেবিল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ফার্নিচার পণ্যে রূপান্তরে সহায়তা করবে। এর মধ্যে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, এয়ার পিউরিফায়ার ও অন্যান্য হোম অ্যাপ্লায়েন্সের প্যাকেজিংও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ক্রেতাদের স্যামসাং পণ্য ব্যবহারের ধরনেও টেকসই অবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করবে স্যামসাং। এ অভিজ্ঞতা কার্বন পদচিহ্ন কমাতে মানুষের ক্ষমতায়নে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রতিষ্ঠানটি এর সোলারসেল রিমোটে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এর ফলে, ইন-বিল্ট সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ব্যাটারির অপচয় কমেছে এবং যা দিন ও রাত উভয় সময়েই চার্জ দেয়া যাবে। সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সোলারসেল রিমোট ওয়াই-ফাই রাউটারের মতো ডিভাইসের রেডিও তরঙ্গ থেকে বিদ্যুত পাবে। ২০২৫ সালের মধ্যে স্যামসাংর পরিকল্পনা রয়েছে সকল টিভি ও ফোন চার্জারের প্রায় শূন্য-স্ট্যান্ডবাই পাওয়ারে চালানোর, যাতে ওই পণ্যগুলো ব্যবহারে প্রায় শূন্য এনার্জি ব্যবহৃত হয়।
ই-বর্জ্য ইলেকট্রনিকস শিল্পের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই, ২০০৯ সাল থেকে স্যামসাং পাঁচ মিলিয়ন টনেরও বেশি ই-বর্জ্য সংগ্রহ করেছে। মোবাইল পণ্যের জন্য স্যামসাং গত বছর সাস্টেইনেবিলিটি প্ল্যাটফর্ম গ্যালাক্সি ফর দ্য প্ল্যানেট চালু করেছে। এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বাস্তবিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পরিবেশের ওপর ডিভাইসের ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করা।প্রতিষ্ঠানগুলো যে উদ্ভাবনী সমাধান বিকাশে কাজ করছে, তার মাধ্যমে স্যামসাং ওয়াশিং মেশিন কাপড় পরিষ্কারের সময় পানি চলাচলের পথে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ হ্রাস করবে এবং এটি প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করবে।
ফ্রিস্টাইল ওজনে হালকা ও বহনযোগ্য একটি স্ক্রিন, যা আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো আপনাকে নিখুঁত ছবির অভিজ্ঞতা দিবে। এতে রয়েছে এআইযুক্ত সাউন্ড সিস্টেম, বিল্ট-ইন স্ট্রিমিং অ্যাপস এবং স্মার্ট টিভির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় ফিচার, যার ফলে একে যেকোনো জায়গায় সেট করা যায় এবং ১০০ ইঞ্চি পর্যন্ত প্রজেক্ট করা যায়।
স্যামসাং গেমিং হাব ক্লাউড ও কনসোল গেম খেলার জন্য একই প্ল্যাটফর্মে সব রকম সুবিধা প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ২০২২ সালের স্মার্ট টিভি এবং মনিটর উন্মোচন করতে প্রস্তুত৷ এ ছাড়া, ওডিসি আর্ক হচ্ছে ৫৫ ইঞ্চির ফ্লেক্সিবল ও কার্ভড গেমিং স্ক্রিন, যা মাল্টি-ভিউ সুবিধার সঙ্গে স্ক্রিনের অভিজ্ঞতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায় এবং ব্যবহারকারীদের একইসঙ্গে গেম খেলার, বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করার ও গেমিং ভিডিও দেখার সুযোগ করে দেয়।