ক.বি.ডেস্ক: দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠন বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) ‘‘৩৫ বছর পদার্পন’’ এ প্রকাশিত স্মরণিকা গ্রন্থের উন্মোচন ও ওয়েব সাইটের নতুন ভার্সন উদ্বোধন করা হয়। গতকাল বুধবার (২৩ মার্চ) বিসিএস ইনোভেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত স্মরণিকা গ্রন্থের উন্মোচন ও ওয়েব সাইটের নতুন ভার্সন উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বিসিএস’র চারবারের সাবেক সভাপতি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বিসিএসর ৩৫ বছর পদার্পনে প্রকাশিত স্মরণিকা গ্রন্থের উন্মোচন ও ওয়েব সাইটের নতুন ভার্সন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিএস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম কামাল, সাবেক সভপতি এস এম ইকবাল, সাবেক পরিচালক শাফকাত হায়দার, সাবেক সহসভাপতি মো. মইনুল ইসলাম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মামলুক সাবির আহমেদ, সাবেক কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আতিক ই রব্বানী, সাবেক পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, সাবেক মহাসচিব মহাসচিব মোহাম্ম জহিরুল ইসলাম, সাবেক সহসভাপতি কাজী আশরাফুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক, সাবেক পরিচালক মো. শহিদুজ্জামান, সাবেক সহসভাপতি মো. ইউসুফ আলি শামীম।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহীদ-উল-মুনীর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস সহসভাপতি ও ৩৫ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. জাবেদুর রহমান শাহীন। বক্তব্য রাখেন বিসিএস মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন বিসিএস’র যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন। অনুষ্ঠানে বিসিএস’র ভিশনারি লিডার, কার্যনির্বাহী কমিটি ও ৩৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানের স্পন্সরদের মধ্যে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিএস’র কোষাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালক মোশাররফ হোসেন সুমন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে কমপিউটার চেনানোর একক দাবিদার বিসিএস। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিসিএস পথিকৃত এর ভূমিকা পালন করে এসেছে। এই খাতে বিসিএসর ভূমিকা অসাধারণ। যারা পথ দেখায় তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। বিসিএস’র ব্যর্থতার কোন ইতিহাস নেই। ৯৬ সালে মাত্র ১৮ জন সদস্য নিয়ে বিসিএস কমপিউটারের ওপর শুল্ক এবং ভ্যাট প্রত্যাহার করতে পেরেছিল। বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর মধ্যে এত কম সদস্য নিয়ে জাতীয় দাবি পূরণ করার কৃতিত্ব অন্য কোন সংগঠনের নেই। শুধু শুল্ক আর ভ্যাট প্রত্যাহার করতে পেরেছিল তা নয়, সেসময়ের সিদ্ধান্ত ২০২৩ পর্যন্ত বলবত থাকবে সরকারের কাছে এমন ঘোষণাও আদায় করে নিয়েছিল বিসিএস। ২০০৮ সালের বই মেলায় বিসিএসর স্লোগান ছিল একুশের স্বপ্ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বিসিএস’র গঠনতন্ত্রে এটা বলা নেই যে শুধু কমপিউটার ব্যবসায়ীরা এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবে। যত রকমের কমপিউটার পেশাজীবি আছেন সবাই এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন। বেসিস, আইএসপিএবির যাত্রাও হয় বিসিএসর হাত ধরে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর বড় ভাই হচ্ছে বিসিএস এমন দাবি করলেও ভুল হবে না। বিসিএসে যদি আমি না আসতাম তাহলে আমি হয়তো একজন কমপিউটার ব্যবসায়ী হতাম কিন্তু আজকের এই স্থানে আসতে পারতাম না। ৩৫ বছরের এই পথচলা অবিরত থাকুক। তথ্যপ্রযুক্তিতে বিসিএস দক্ষ নেতৃত্বে নিজেদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে যাবে বলেই আমি আশাবাদী। ৩৫ বছরের স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য বর্তমান ইসি কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই। অন্তত নতুন সদস্যদের আমাদের গৌরবাজ্জ্বল ইতিহাস জানা উচিত। এই ৩৫ বছর বিসিএসর অর্জনের।
বাংলাদেশের মানুষকে কমপিউটার চেনানোর একক দাবিদার বিসিএস
মোস্তাফা জব্বার
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, আমরা বিসিএসকে প্রযুক্তি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কাগজবিহীন সংস্কৃতি অনুশীলনের মাধ্যমে সদস্যরা নিজেরাই এখন নিজেদের সনদ সংরক্ষণ করতে পারবেন। এ ছাড়াও নতুন সদস্য ফর্ম পূরণ, সদস্যদের হালনাগাদ অবস্থা জানা, অনলাইনে সদস্য ফি প্রদান, ওয়েবসাইটে সদস্যদের জন্য নিজেদের সাইটকে সজ্জিতকরণ, নিজের ওয়েবসাইটের সঙ্গে সমিতির ওয়েবসাইটের সংযোগ ঘটানোসহ নানাবিধ সুবিধাসহ নতুন ভার্সন সমৃদ্ধ হচ্ছে। বিসিএস আইসিটি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গত বছর আমরা ডব্লিউসিআইটি ২০২১ এবং অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট সম্পন্ন করেছি।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর বড় ভাই হচ্ছে বিসিএস
মোস্তাফা জব্বার
মো. জাবেদুর রহমান শাহীন বলেন, বিসিএসর ৩৫ বছর উদযাপনকে স্মরণীয় করে নিতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। বিসিএসর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং প্রযুক্তি খাতে এই সংগঠনের ভূমিকাকে সবার মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা ছিল আমাদের। আশা করছি এই স্মরণিকা প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য স্মৃতিস্মারক হিসেবে বিবেচিত হবে।