আমরা এখন বসবাস করছি প্রযুক্তির ডিজিটাল যুগে। যত সময় যাচ্ছে তত নিত্য নতুন প্রযুক্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং পরিবর্তন ঘটছে অনেক প্রযুক্তির। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে মানুষ এখন তাদের অনেক কাজ খুব সহজেই করতে পারছে। বিজ্ঞানের অসাধারণ আবিষ্কার হচ্ছে ডেস্কটপ বা কমপিউটার। আপনারা চাইলে এই ডেক্সটপ পিসি ব্যবহার করে অনলাইনে যেকোনো কাজ খুব সহজেই করতে পারবেন।
বর্তমানে বাজারে দুই ধরনের কমপিউটার পেতে পারেন একটি হচ্ছে মূলত ব্র্যান্ড পিসি যা সাধারণত আপনারা বাজারে পূর্নাঙ্গ আকারে পেয়ে যাবেন। আর অন্যটি হচ্ছে তৈরি করা (পিসি বিল্ড) এক্ষেত্রে আপনি কমপিউটারটি পূর্নাঙ্গ আকারে পাবেন না। আপনি নিজের চাহিদা অনুযায়ী কমপিউটারটি তৈরি করে নিতে পারবেন।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে কিভাবে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে কমপিউটার তৈরি করবেন বা কমপিউটার কিনতে পারবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়লে আপনারা বিস্তারিত সব কিছুই জানতে পারবেন। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান হেলাল
ডেস্কটপ বা কমপিউটার: একটি কমপিউটার তৈরি করতে গেলে আপনাদের অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ আনুষাঙ্গিক পণ্যের প্রয়োজন হবে। যে সকল পণ্যগুলো প্রয়োজন একটি কমপিউটার তৈরির জন্য- প্রসেসর, মাদারবোর্ড, স্টোরেজ, র্যাম, কেসিং এবং গ্রাফিক্স কার্ড। আপনি যখন একটি কমপিউটার তৈরি বা কিনবেন তখন আপনার এসব গুরুত্বপূর্ণ আনুষাঙ্গিক পণ্যগুলোর প্রয়োজন হবে।
প্রসেসর
যেকোনো কমপিউটারের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে প্রসেসর। প্রসেসরকে তুলনা করা হয়ে থাকে কমপিউটারের ব্রেইনের সঙ্গে। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে একটি কমপিউটারের জন্য প্রসেসরের গুরুত্ব ঠিক কতটা। কমপিউটারের যেকোন সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে হিসাব-নিকাশ সংক্রান্ত যেকোন কাজ প্রসেসরের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে বাজারের সবচেয়ে সেরা কমপিউটারের প্রসেসর হচ্ছে ইন্টেল এবং এমডি।
ব্যবহারকারী এর মধ্য থেকে যে কোন ধরণের প্রসেসর নিয়ে থাকে। আপনি চাইলে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে যে কোন একটি থেকে প্রসেসর কিনতে পারেন। কেননা এই দুটি প্রতিষ্ঠান খুবই বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয়। আপনারা এই দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক ভালো ভালো প্রসেসর কিনতে পারবেন। চাইলে এক্ষেত্রে ইন্টেলের প্রসেসর কিনতে পারেন তাহলে দাম কিছুটা সাশ্রয় হবে আপনার জন্য। ইন্টেলের ৩,১০ জেনারেশনের প্রসেসরটি আপনারা পেয়ে যাবেন ১১,৪০০ টাকায়।
মাদারবোর্ড
পিসি, ডেক্সটপ বা কমপিউটার যাই হোক না কেন মাদারবোর্ড তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কমপিউটারের মাদারবোর্ডের কাজ হচ্ছে মূলত সমস্ত পার্টসগুলোকে একসঙ্গে রাখা। ডেক্সটপ বা কমপিউটারের কোন কিছুই মাদারবোর্ড ছাড়া কিন্তু পরিপূর্ণ নয়। বর্তমান সময়ে আপনারা চাইলে বিভিন্ন ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে মাদারবোর্ড কিনতে পারবেন। তাদের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান হলো গিগাবাইট ও আসুস। আপনারা এক্ষেত্রে ভালো বাজেটের মধ্যে গিগাবাইটের জিএ-এইচ১১০ ডি৩এ ডিডিআর৪ এটি আপনার জন্য উত্তম হতে পারে। আপনারা এটি বর্তমান বাজারে কিনতে গেলে মূল্য পড়বে ৮০০০ টাকা।
স্টোরেজ
আমরা যেমন মস্তিষ্কের মাধ্যমে সমস্ত ধরণের তথ্য মনে রেখে থাকি তেমনি কমপিউটারের তথ্য জমা রাখার জন্য কোন না কোন স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন পড়ে। সাধারণত দুই ধরণের স্টোরেজ আমাদের অনেকের কাছে পরিচিত একটি হলো হার্ডডিস্ক ড্রাইভ এবং অন্যটি হলো এসএসডি। আপনি যদি এই ক্ষেত্রে পারফরম্যান্সের দিক থেকে হিসাব করেন তাহলে এসএসডি হার্ডডিস্ক ড্রাইভের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে।
তাই এখানে আপনার জন্য সব থেকে ভালো হয় আপনি যদি ২৪০ গিগাবাইট এসএসডির সঙ্গে আর একটি এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক ড্রাইভ লাগানো। তারপরে শুধু সিস্টেম সফটওয়্যারগুলো এসএসডিতে রাখতে হবে এবং বাকিগুলো হার্ডডিক্স ড্রাইভে এতে করেই স্টোরেজে অনেক ভালো পারফর্মেন্স পাবেন আপনি। আপনি যদি ২৪০ জিবি এসএসডি স্টোরেজ বাজার থেকে কিনতে চান তাহলে এই ক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে ২৪০০ টাকা এবং আপনি যদি ১ টেরাবাইট হার্ডডিস্ক কিনতে চান তাহলে আপনার এই ক্ষেত্রে ৩৫০০ মতো খরচ হতে পারে।
র্যাম
কমপিউটারের প্রতিটা প্রোগ্রাম সঠিকভাবে চালনা করার জন্য অবশ্যই একটি অস্থায়ী মেমোরি দরকার হয়ে থাকে। আর এই অস্থায়ী মেমোরির দায়িত্বটা পালন করে থাকে র্যাম। আপনার পিসির প্রোগ্রামগুলো মূলত কেমন কাজ করবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে র্যাম এর ওপর। তাই র্যাম নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সেটি উন্নত এবং বড় হওয়া উচিত। যেহেতু আমরা ৪০ হাজার টাকার মধ্যে পিসি বিল্ড করতে চাচ্ছি তাই আমাদের সেই অনুযায়ী র্যাম নিতে হবে। আপনি চাইলে এক্ষেত্রে যে কোন প্রতিষ্ঠানের ৮ গিগাবা্ইট র্যাম আপনি নিতে পারেন। আপনারা মার্কেটে এই র্যামগুলো পেয়ে যাবেন ৪ হাজার টাকার মধ্যে।
কেসিং
আপনারা যারা কমপিউটার ব্যবহার করে থাকেন এটা তো সকলেই জানেন যে কমপিউটারের সকল ধরনের পার্টসগুলো একই স্থানে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে কেসিং। অনেক ক্ষেত্রে অনেকেরই কেসিংয়ের সঙ্গে পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে থাকে। আপনি যদি আলাদাভাবে পাওয়ার সাপ্লাই কিনে ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনি এই ক্ষেত্রে ভালোটা লাগাতে পারেন। বাজারে ভালো মানের কেসিং ৪৫০০ টাকায় পেয়ে যাবেন।
মাউস
মাউস একটি কমপিউটারের একটি ক্ষুদ্র যন্ত্র যা পিসির কাজ সহজ করে তোলে। এ৪ টেক, মাইক্রোপ্যাক, এইচপি, লজিটেক ছাড়াও বর্তমান বাজারে আরও অনেক ধরনের মাউস পাওয়া যায়। মাঝারি মানের একটি মাউস হল এ৪ টেক জি৩-২৭০এন। যার বর্তমান মূল্য ৪৯০ টাকা।
কী-বোর্ড
কমপিউটারে ডেটা ইনপুট করার জন্য কোন কীবোর্ড বিকল্প নেই। একটি কীবোর্ড ছাড়া, পিসি অসম্পূর্ণ হবে। এইচপি সিএস৭০০ ওয়্যারলেস কীবোর্ড মডেলটি বিভিন্ন দামে বাজারে উপলব্ধ অনেক ধরণের কীবোর্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। এই কিবোর্ডটির বর্তমান মূল্য ১,৪৫৫ টাকা।
সিপিইউ কুলার
সমস্ত কাজের জন্য সিপিইউ কুলারের প্রয়োজন হয় না। সিপিইউ কুলার শুধুমাত্র পেশাদার গেমার এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রয়োজন। একটানা দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে পিসিকে অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে বাঁচাতে সিপিইউর সঙ্গে কুলিং ফ্যান ব্যবহার করা হয়।
আপনারা এই সকল পণ্যগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই একটি ভালো কমপিউটার তৈরি পারবেন। যারা ৪০ হাজার টাকার মধ্যে তৈরি করতে চান তাদের জন্য ওপরের প্রতিবেদনে বিস্তারিত সবই তুলে ধরা হয়েছে। আপনারা খুব সহজেই এভাবে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে কমপিউটার তৈরি করতে পারবেন বিডিস্টল ডট কম থেকে।
আরও বিস্তারিত জানতে: www.bdstall.com