করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) উদ্যোগে বাংলাদেশে এই প্রথম অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ‘করোনাথন-১৯’ হ্যাকাথনের উদ্বোধন হলো আজ।
তিন দিনব্যাপী (২-৪মে) অনুষ্ঠিতব্য এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটি আজ (শনিবার) ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, ডিআইইউর মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের প্রধান ও করোনাথন-১৯ এর আহ্বায়ক ড. শেখ মোহাম্মদ আল্যায়ার। সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার এবং সঞ্চালনা করেন বিএসডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন।
ইতিমধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তাইওয়ান, নাইজেরিয়া, জাপান, মেক্সিকো, চীন, দক্ষিন কোরিয়া এবং স্বাগতিক বাংলাদেশ থেকে শতাধিক দল এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করছে। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই ক্যাটাগরিতে- জুনিয়র ও সিনিয়র ক্যাটাগরি। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য জুনিয়র ক্যাটাগরি এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সিনিয়র ক্যাটাগরি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপকে মোকাবেলার জন্য চিকিৎসকদের পাশাপাশি প্রযুক্তিবিদদেরও একটা দায়বদ্ধতা আছে। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি হতে পারে প্রযুক্তিবিদদের অন্যতম একটা হাতিয়ার। সে লক্ষ্যেই করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ‘করোনাথন-১৯’ হ্যাকাথনের আয়োজন, যেখানে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর তরুণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছেন। এই তরুণরা ডিআইইউর গবেষকদের তত্ত্বাবধানে করোনা মোকাবেলার প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন উপায় উদ্ভাবন করবেন এবং বিজয়ীগণ পুরস্কার হিসেবে পাবেন ২৫০০০ ইউএস ডলার।
মোস্তফা জাব্বার বলেন, করোনা পরিস্থিতি আমাদেরকে নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে. চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে স্বাগত জানিয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশ একসঙ্গে লকডাউন হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ইতিপূর্বে পৃথিবীতে ঘটেনি। তবে সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানুষ এ পর্যায়ে এসেছে তার মেধা ও প্রযুক্তিকে ব্যাবহার করে। এবারের সংকটও মানুষ তার অসীম মেধা ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মোকাবিলা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, তোমরা এখনই করোনার ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করে ফেলবে এমনটা মনে করি না। তবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কী করে বড় বড় সমস্যার সমাধান করা যায় তার সঙ্গে তোমাদের পরিচয় ঘটল। ভবিষ্যতে পৃথিবীতে আরও অনেক দুর্যোগ আসবে, মহামারি আসবে, তখন এই তরুণরাই তাদের মেধা ও প্রযুক্তিকে যেন মানব সভ্যতা রক্ষার কাজে ব্যয় করে সেই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার বলেন, করোনা সমস্যার সমাধান কী তা আমরা এখনো জানি না। পৃথিবীর সবাই এর সামাধান খুঁজছে। আমরা সেই সমাধান খোঁজার কর্মযজ্ঞে সারা পৃথিবীর তরুণদেরকে সম্পৃক্ত করার একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি। ইতিমধ্যে এই প্ল্যাটফর্মে বিশ্বের ১২টি দেশ থেকে তরুণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছেন। এই তরুণদের হাত ধরেই করোনা সমস্যার সমাধান আসবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
কভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য সমস্যার সমাধান সনাক্তকরণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে জরুরী সমস্যাগুলো-স্বাস্থ্য, খাদ্য, পুষ্টি ইত্যাদির সমাধান নির্ণয় করা, শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করা এবং বর্তমান সংকট মোকাবেলায় বিভিন্ন উপায় উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীগণ যেন তাদের জ্ঞান এবং দক্ষতা কাজে লাগাতে পারে সে লক্ষ্যে তাদের যথাযথ প্ল্যাটফর্ম প্রদান করাই এই ‘করোনাথন-১৯’ এর উদ্দেশ্য।
প্রতিযোগিতার বিস্তারিত: https://coronathon19.daffodilvarsity.edu.bd/