ক.বি.ডেস্ক: আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশপাশি গতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে ‘‘অডিট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার’’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে এ রকম উদ্যোগ এটিই প্রথম। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ৩টি পর্যায়-বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় ও অডিট অফিসগুলোর ইউজার ফ্রেন্ডলী করে এ সফটওয়ার ডেভেলপ করা হয়েছে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে অডিট অফিসসমূহে মোট আপত্তির সংখ্যা, আপত্তির ধরণ, প্রেরিত জবাবের সংখ্যা, জবাবের ওপর গৃহিত ব্যবস্থা সর্বোপরি অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির জারীপত্র ইত্যাদি কোথায় কি অবস্থায় আছে তা খুঁজে বের করা সহজ নয়। কোন্ অডিট আপত্তি কোথায় অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে তা এ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী অতি সহজে জানতে এবং সে মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবেন।
সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিলস্থ শিল্প ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিব মৃত্যুঞ্জয় সাহা, এনট্রান্স লজিক সিস্টেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াত মাহবুবসহ শিল্প মন্ত্রণালয় ও দপ্তর/সংস্থাসমূহের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অডিট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার প্রবর্তন একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। আমরা অন্যদের থেকে এগিয়ে গেলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দুর্নীতি কমাতে এ সফটওয়্যার ভূমিকা রাখবে।
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, শুধু আইন দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যাবে না, সেই সঙ্গে সিস্টেমেরও পরিবর্তন করতে হবে। এই বাণীকে ধারণ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ে বর্তমান ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে অডিট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার প্রতিস্থাপন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অডিট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার প্রতিস্থাপনের ফলে শিল্প মন্ত্রণালয় ও দপ্তর/সংস্থার অডিট আপত্তি দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে।
মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে অদ্যাবধি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সরকারি অফিগুলোতে অডিট ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ম্যানুয়ালী অডিট আপত্তিসমূহ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যয় হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অডিট আপত্তির প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয় না বিধায় বছরের পর বছর অডিট আপত্তিগুলো অনিষ্পন্ন অবস্থায় থেকে যায়।
জাকিয়া সুলতানা বলেন, জনগণকে কাঙ্খিত সেবা প্রদান এবং সরকারি নীতি আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য টেকসই ব্যয় ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অডিট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অনিষ্পত্তিকৃত অডিট আপত্তিসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে এবং জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
শিল্প মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন ১৩টি দপ্তর/সংস্থার অধীনে প্রায় ২৪৮টি অডিট অফিস রয়েছে। ডিসেম্বর, ২০২১ মাস পর্যন্ত মোট অডিট আপত্তির সংখ্যা ৪৮৬৯টি। এর মধ্যে সাধারণ ১৬৬১টি, অগ্রিম ২৮১২টি, খসড়া ৬৫টি এবং সংকলনভূক্ত ৩৩১টি। সকল অডিট আপত্তির বিপরীতে মোট টাকার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।