Monday, November 25, 2024
More

    সর্বশেষ

    বিডিওএসএনের বিনা মূল্যে হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রম শুরু

    উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া এখন অনেক শিক্ষার্থীরই প্রথম পছন্দ। ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল ফ্লো অব টারশিয়ারি লেভেল এডুকেশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। এদের অধিকাংশই বিভিন্ন কনসালটেন্সি ফার্মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া ও ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করে থাকেন। বিনিময়ে ফার্মগুলো একেকজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। কোন কনসালটেন্সি ফি ছাড়াই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশগামী শিক্ষার্থীদেরকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) শুরু করলো বিনা মুল্যে হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রম।

    এর আওতায় কিভাবে ক্লাস এইট থেকে পিএইচডি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্বের ৩০টি দেশের ৬০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সুযোগ পাওয়া যায়,এমন নানা প্রশ্নের উত্তরের জন্য শিক্ষার্থী,শিক্ষক,সাপোর্টগ্রুপ লিডারদের সঙ্গে বিভিন্ন কথোপকথনের লাইভ প্রোগ্রামের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তথ্যসমৃদ্ধ বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া এবং প্রয়োজনে ওয়ান টু ওয়ান সাপোর্ট দেয়া হবে। এর জন্য বিদেশগামী শিক্ষার্থীকে কোথাও কোন কনসালটেন্সি ফি দিতে হবে না।

    জানা গেছে,প্রতি বছর ইউরোপ,আমেরিকা,অস্ট্রেলিয়া,নিউজিল্যান্ড,রাশিয়া,জাপান,মালয়েশিয়া,প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বৃত্তি নিয়ে বিনা খরচে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছেন। পড়ালেখা শেষে কেউ কেউ সেসব দেশে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন। ইউনেস্কো ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটিসটিকসের (ইউআইএস) তথ্য বলছে,২০০৫ সালে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৬ হাজারে। ২০১৯ সালে এসে তা লক্ষাধিক ছাড়ায়।

    ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে অনেক ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে আন্ডারগ্র্যাড ও পোস্ট গ্র্যাডে পড়তে যায়। এরমধ্যে হয়তো ৫০ জন কোন না কোনভাবে গণিত অলিম্পিয়াড,বিজ্ঞান কংগ্রেস ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত এবং তারা খুব ভাল রেকমেন্ডেশন যোগাড় করতে পারে। এদের বেশিরভাগই স্কলারশীপ পায়। বাকীরা নিজেদের টাকাতে পড়তে যায়।

    সারাদেশে নামে-বেনামে দুই হাজারের মতো কনসালটেন্সি ফার্ম গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারের মনিটরিং না থাকায় ভয়ংকর প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেছে কয়েকটি চক্র। আর তাদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার পরিবার। বিদেশ যাওয়া শিক্ষার্থীদের ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থাকে পছন্দের শীর্ষে। মানসম্পন্ন ও ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই ভর্তি ও ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম নিজেরাই সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে,শিক্ষার্থীদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে কনসালটেন্সি ফার্মগুলোর চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে ওই ফাঁদে পা দেয় একটি বড় অংশ। এসব ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই নিজের লাখ লাখ টাকার লোকসান করেছেন।

    চটকদার প্রচারণার মাধ্যমে অসাধু এজেন্সিগুলো প্রধানত দুই ধরনের প্রতারণা করে থাকে। এক. শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া অসম্পন্ন রাখা ও বিদেশে না পাঠানো। দুই. ভিসা করে বাইরে পাঠিয়ে প্রতিশ্রুত সুযোগ-সুবিধা না দেয়া। উচ্চশিক্ষা গ্রহণে দেশের বাইরে গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতারক চক্রগুলো এখন লাগামহীন। এটিকে মানব পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের নতুন ক্ষেত্র বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আইন শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট খাতের বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে,গত ১০ বছরে রাজধানীতে স্টুডেন্ট ভিসা কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অন্তত দেড়শ’কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

    বিডিওএসএনের আয়োজনে শুরু হওয়া বিনা মুল্যে হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রমের মাধ্যমে স্কলারশীপ পাওয়ার জন্য কখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে,আর্থিক ও মেধা অনুসারে কোন দেশে কোন ইউনিটে যাওয়া যায়,কোন কোন ইউনিটে আবেদন করে লাভ নাই,স্কলারশীপ কোথায় পাওয়া যায়,ভর্তির টাকা কতো সহজে পাঠানো যায়,একটি ইউনিটে হয়তো পার্ট টাইম কাজ যোগাড় করা সহজ,অন্যটাতে সেটা কঠিন -এমন ক্ষেত্রে কোনটা বেছে নিতে হবে, স্কলারশীপের জন্য আসলে কীভাবে লড়তে হয় – এরকম নানা বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করা হবে। প্রয়োজনে বিনা মুল্যে ওয়ান টু ওয়ান সাপোর্ট দেয়া হবে। এর আওতায় বিডিওএসএন আয়োজন করেছে এইচএসএ টক। দেশের বাইরে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তিরা কিভাবে দেশের বাইরে গেলেন,কিভাবে তারা নিজেদের জন্য স্কলারশীপের জোগাড় করেছিলেন এমন নান তথ্য সবাইকে জানানোর জন্যই চলছে ফেসবুক লাইভ সেশন।

    বিনা মুল্যে হায়ার স্টাডি সহায়তা কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি এবং ইএসডিজি ফর বিডি প্রকল্প।

    সর্বশেষ

    পড়েছেন তো?

    Stay in touch

    To be updated with all the latest news, offers and special announcements.