ক.বি.ডেস্ক: ‘প্রযুক্তিতে অগ্রগতি’ স্লোগানে বিসিএস কমপিউটার সিটিতে শুরু হলো পাঁচ দিনব্যাপী (৭-১১ ডিসেম্বর) ‘‘বিজয়ে প্রযুক্তি মেলা ২০২১’’। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি তথা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিসিএস কমপিউটার সিটি ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের প্রযুক্তির মেলা। মেলা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
বিজয়ে প্রযুক্তি মেলা ২০২১ এর উদ্বোধন করেন বিশেষ অতিথি ও প্রধান বক্তা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তোফা জব্বার। এ সময় সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, বিসিএস কমপিউটার সিটির প্রতিষ্ঠাতা প্রথম সভাপতি আহমেদ হাসান জুয়েল, স্মার্ট টেকনোলিজস্ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম এবং গ্লোবাল ব্র্যান্ড (প্রাঃ) লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলার আহ্বায়ক মো. মাহাবুবুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিসিএস কমপিউটার সিটি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ এল মজাহার ইমাম চৌধুরী (পিনু চৌধুরী)।
বিজয়ের মাসে আকর্ষণীয় সব অফার নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের মেলা। এবার মেলায় থাকছেনা কোনো প্রবেশ টিকেট এবং ফেসবুকে রেজিস্টেশন করলেই থাকছে উপহার। ৫০০ টাকার পণ্য ক্রয়ে থাকছে একটি করে লাকী কুপন। মেলায় থাকছে বিশেষ ছাড় ও উপহার। মার্কেটে আগত সকল প্রযুক্তি প্রেমী ও ক্রেতারা পাবেন মূল্য ছাড়, কুপন, ক্যাশ ব্যাক অফারসহ বিভিন্ন অফার। এবারের মেলাটি অনলাইনে এবং সরাসরি আয়োজন থাকছে। গেমিং প্রতিযোগিতা, নতুন পণ্যে প্রদরনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা (বাচ্চাদের জন্য), কুইজে ১৬ (সবার জন্য) এবং ভিডিও ব্লগ প্রতিযোগিতা (সবার জন্য)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিজয়ের মাস ১২ তারিখে বাংলাদেশে ৫জি চালু হবে। এর ফলে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করবে। ২০২৪ সালে দেশে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল চালু হবে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হবে।এই প্রযুক্তি পণ্যের বাজার দেশের আইসিটি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। ১৯৯৮ সালে দেশে প্রথম আইডিবি ভবনে প্রযুক্তি পণ্যের মেলা শুরু হয়। সেই মেলা একটা প্রজন্মের কাছে প্রযুক্তির ধারণার বীজ বুনে দেয়। শুধুমাত্র কমপিউটার বিক্রির জন্য একটি আলাদা মার্কেট হতে পারে সেটি কেউ কল্পনাও করে নাই। আইডিবির এই মার্কেট অনুসারে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রযুক্তি পণ্যের জন্য অনেকগুলো আলাদা মার্কেট গড়ে উঠেছে। এই প্রযুক্তি পণ্যের বাজার শুধু কমপিউটার বিক্রিই করে না। একই সঙ্গে এই বাজার ব্যবহারকারীদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্নভাবে আবদান রাখছে। কমপিউটারের পাশাপাশি এই মার্কেট বিভিন্ন প্রযুক্তি ডিভাইস বিক্রি করবে বলে আশা করেন তিনি।
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এ মেলা গুরুত্বপূণ ভূমিকা পালন করবে। সারাদেশের মানুষের কাছে এই মার্কেট একটি গুরুত্ব রয়েছে। কমপিউটার, ল্যাপটপ বিক্রির পাশাপাশি বিসিএস কমপিউটার সিটিতে মোবাইল ফোনের বিক্রি হলে এক ছাদের নিচে সব পাওয়া যেতো তাহলে ক্রেতাদের জন্য সুবিধা হতো।
ড. মো. সবুর খান বলেন, বিসিএস কম্পিউটার সিটি আমার জন্য একটি আবেগের জায়গা। হাঁটিহাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে এই মার্কেট। আরও এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই সিটির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
আহমেদ হাসান জুয়েল বলেন, এই খারাপ সময়ের মধ্যেও আইডিবি ভবনের বিসিএস কমপিউটার সিটির মার্কেট বেশ ভালোভাবেই টিকে আছে এবং ব্যবসা করছে। যে কোনো মহামারি মোকাবেলা করেও যেনো আমার ভালোভাবে টিকে থাকতে পারি তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।
মোহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম বলেন, কমপিউটার বাজার সম্প্রসারণের জন্য বিসিএস কমপিউটার সিটির অনেক বড় ভুমিকা পালন করেছে। বিশ্বের কোথায় এক ভবনের শুধু কমপিউটারের বাজারে নেই। এই মাকেটে মানুষ শুধু কমপিউটার কিনতেই আসে না। এখাসে কমপিউটার সম্পর্কে জানতেও আসে।
আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মার্কেটকে আরও ভালোভাবে সাজাতে হবে। আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে হবে। শুধু মার্কেটের অবকাঠামো না, মার্কেটের কর্মীদেরও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবে বিক্রির প্রস্তুতি নিতে হবে।
এ এল মাজাহার ইমাম চৌধুরী বলেন, সেরা মান ও সেরা পণ্য কেনার জন্য বিসিএস কমপিউটার সিটির বিকল্প সারাদেশেও নেই। এই মেলার মাধ্যমে আমরা করোনা পরবতী নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে চাই।
মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, এবার মেলায় থাকছে না কোনো প্রবেশ টিকেট এবং ফেসবুকে রেজিস্টেশন করলেই থাকছে উপহার। প্রত্যেক ৫০০ টাকার পণ্য ক্রয়ে থাকছে একটি করে লাকী কুপন। মেলায় থাকছে বিশেষ ছাড় ও অনেক অনেক উপহার।
সিটি কমিটির সদস্য ও মিডিয়া কনভেনার মো. জাহেদ আলী ভূঁইয়া মেলায় সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সকল স্বাস্থবিধি মেনে চলার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত বিজয়ে প্রযুক্তি মেলা ২০২১ এর স্পন্সর আসুস, গিগাবাইট, লেনোভো এবং টেন্ডা।