করোনা পরিস্থিতিকালীন সময়ে আইসিটি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্প ‘‘ফুড ফর ন্যাশন’’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করে। আইডিয়া প্রকল্পের ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ’ ব্যানারে গত জুলাই মাসে ‘‘ডিজিটাল হাট’’ এর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এই প্ল্যাটফর্মটিতে কারিগরি সহায়তা করে আইসিটি বিভাগের এটুআই ও একশপ। এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ভার্চুয়ালি ফুড ফর ন্যাশনের ডিজিটাল কোরবানির হাটর সর্বাধিক প্রচারকারী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে আইডিয়া প্রকল্পের অফিসে অনুষ্ঠানে বাছাইকৃত ১জন ইউডিসি উদ্যোক্তাসহ সেরা ১০ জনের নাম ঘোষনা করা হয় এবং তাদের মধ্যে উপস্থিত উদ্যোক্তাগণকে ক্রেস্টসহ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব। সভাপতিত্ব করেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক। সমাপনী বক্তব্য রাখেন আইডিয়া প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক কাজী হোসনে আরা। সঞ্চালনা করেন একশপ, এটুআইর হেড অব ই-কমার্স রেজওয়ানুল হক জামি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইডিয়া প্রকল্পের পরামর্শক মোহাম্মদ ওমর ফারুক, কমিউনিকেশন্স বিষয়ক পরামর্শক সোহাগ চন্দ্র দাস এবং শারমিন আকতার প্রমুখ।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, প্যানডেমিকের সময় সকলের মধ্যে অনেক ভয়-ভীতি ছিল এবং সে সময় অনেকটা যুদ্ধের মত অবস্থার সৃষ্টি হয়। করোনার সময় খাদ্য ব্যবস্থাপনায় অনেক ঝুকিঁ ছিল এবং কোরবানির সময় লোকসমাগমের বিষয়টিও উল্লেখ্য। এ ধরনের পরিস্থিতিতে এই ডিজিটাল হাট যথেষ্ট ভুমিকা রেখেছে।
পার্থপ্রতিম দেব বলেন, প্রথমবারের মত এ ধরনের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করলেও ফলাফল হিসেবে এই করোনাকালীন সময়ে সকলের কাছ থেকে সহোযোগিতার পাশাপাশি জনগনের থেকেও ভালো সারা পাওয়া গিয়েছে এবং প্রশংসিত হয়েছে। ই-কমার্স অর্থাত অনলাইনে বিজনেস প্রোমোশনের ক্ষেত্রেও এটি যথেষ্ট কাজ করেছে।
সৈয়দ মজিবুল হক বলেন, করোনার সময়ে ভোক্তা এবং উতপাদনকারির মধ্যে যোগাযোগের যে ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছিল সেটা দূর করতে ফুড ফর ন্যাশন যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। খুব শীঘ্রই ফুড ফর ন্যাশনর জন্য অ্যাপস্ তৈরির কাজ সম্পন্ন করা হবে এবং সকলে ব্যবহার করতে পারবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনলাইনে কোরবানির পশুর ‘ডিজিটাল হাট’ আয়োজন করে। দেশের সর্ববৃহত এই ডিজিটাল হাটের জন্য সারা বাংলাদেশ থেকে গরুর খামারী, চাষী ও স্বতন্ত্র ব্যবসায়ীরা এই প্ল্যাটফর্মে বিনা মূল্যে https://foodfornation.gov.bd/qurbani2020/ ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে নিবন্ধনসহ পশুর ছবি আপলোড করে বিক্রি করার সুযোগ পান। একইসঙ্গে সাধারণ ক্রেতারাও অনলাইন থেকে পছন্দ করে তাদের প্রয়োজনীয় পশু ক্রয় করতে সক্ষম হন।
দেশে মোট ৫২৯৩ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে এবং তাদের জন্য করোনা পরিস্থিতিতে এই ডিজিটাল হাট কোরবানির পশু বিক্রিতে একটি বড় সুযোগ এনে দেয়। এই প্লাটফর্মে প্রায় ১৩ হাজার বিক্রেতা, পাইকার, উদ্যোক্তাগন সংযুক্ত রয়েছে। সারা বাংলাদেশ থেকে সকল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মধ্যে যে উদ্যোক্তা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক খামারী, চাষী ও কোরবানির পশুর তথ্য আপলোডের মাধ্যমে প্রচারণা করে কোরবানির পশু বিক্রি করতে পেরেছেন তাদের পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।
এরই আলোকে খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ মহারাজপুরের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে অনুপ কুমার অধিকারী সেরা ১ জন বিজয়ী হিসেবে ৫০,০০০ টাকার মূল্যমানের পুরস্কারসহ ক্রেস্ট গ্রহণ করেন। এ ছাড়া, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সেরা ১০ জনকে সর্বাধিক প্রচারকারী পুরস্কার হিসেবে ৫০০০ টাকার চেকসহ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এরা হলেন- মো. আল-হেলাল (শংকরচন্দ্র ইউডিসি ০১- খুলনা), মো. মমিনুল হক রাজু (চিথলিয়া ইউডিসি ০১-খুলনা), মো. আবু রায়হান মন্ডল (পীরগঞ্জ ইউডিসি ০১-রংপুর), মো. নাহিদ হোসেন (শ্রীধরপুর ইউডিসি ০১- যশোর), আনোয়ার হোসেন (উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ), মো. তাহের খান (আন্দুলবাড়ীয়া ইউডিসি ০১- চুয়াডাঙ্গা), মো. সোহাগ (তাড়াইল ইউডিসি,কিশোরগঞ্জ), সাফায়েত হোসেন (মোস্তফাপুর ইউডিসি) এবং মুহাম্মদ আতাউর রহমান (দামপাড়া, নিকলী, কিশোরগঞ্জ)।