বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) উদ্যোগে গতকাল রবিবার (১১ অক্টোবর) ‘‘এসএমই’র জন্য পরিষেবা হিসেবে সফটওয়্যার’’ শীর্ষক সফটওয়্যার প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান; এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল হায়দার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেসিস স্থানীয় বাজার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর saas.basis.org.bd ওয়েব সাইটটির উদ্বোধন করেন। এটি এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। ৮টি সফটওয়্যার কোম্পানি-ক্লাউড সলিউশন, জেনারেশন-নেক্সট আইটি সলিউশন, ইউওয়াই সিস্টেমস, অ্যাজোলিউশন সফটওয়্যার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স, Boo2 বাংলা, ড্যাফোডিল কমপিউটার, বাংলাফায়ার সলিউশন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ইনফরমেশন তাদের প্রোডাক্ট/সফটওয়্যার অনলাইনে প্রদর্শন করে। Software-as-a-Service (SaaS) হলো এক ধরণের ক্লাউড কমপিউটিং পরিষেবা মডেল। বর্তমানে বাংলাদেশে SaaS মডেলের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। কোন মূলধন ব্যয় নেই এবং স্বল্প ব্যয়ে মাসিক সাবস্ক্রিপশনের সুযোগ থাকায় এসএমই উদ্যোক্তাগণের জন্য এই মডেল কার্যকর এবং উপযোগী।
ফারহানা এ রহমান বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বহুগুণে বেড়েছে। ই-কমার্স খাতে টেকনোলোজির ব্যবহার বর্তমান সময়ে পণ্যের খরচ কমিয়ে এনেছে। এসএমই উদ্যোক্তারা সফটওয়্যার ব্যবহারে এখনো পিছিয়ে আছে, যার ফলে তারা সবসময় ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল পায় না। এক্ষেত্রে সাস মডেল এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য আশার নতুন কিরণ। এ ছাড়াও ডিজিটালাইজেশনের ব্যবহার উদ্যোক্তাদের স্বল্প মূলধন বিনিয়োগে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। ইনভেন্টরি মডেল ব্যবহার করে এসএমই উদ্যোক্তারা saas.basis.org.bd লিঙ্ক-এ প্রবেশ করে সফটওয়্যারগুলো বিনা মূল্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, বিগত ৬ মাসে লকডাউনে আমাদের জীবনধারা থেমে থাকেনি। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বিনোদন, আলোচনা-সভা সবকিছুতেই প্রযুক্তির ওপর আমাদের যে নির্ভরশীলতা সেটি দেশের মানুষ অনুধাবন করেছে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে কম খরচে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য আইটি বা সফটওয়্যারের ওপর যে নির্ভরতা সেটি আরও গতিশীল করতে সাস মডেল এগিয়ে এসেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে মন্দা দেখা দিয়েছে তা নিরসনে করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অপারেটিং এক্সপেন্স (অপেক্স) নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে। আর তা শুধু ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেই সম্ভব। বেসিসের প্লাটফর্ম ব্যবহার করে এসএমই উদ্যোক্তাগণ এ ক্ষেত্রে মানসিকভাবে আশ্বস্ত হবে। তিনি সরকারের প্রতি প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সুলভ মূল্যে ভালো কোয়ালিটি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ সরবারহের জন্য আহ্বান জানান।
মো. সিরাজুল হায়দার বলেন,প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার, আইটি টুলস, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার সম্পর্কে জানতে হবে, নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বাজার সম্প্রসারণের ওপর ভিত্তি করে অনলাইন ব্যবসায় সক্ষমতা বাড়াতে হবে। করোনা পূর্ব সময়ে অনলাইন ব্যবসার বাজার ৭-১০% থেকে বর্তমানে ৪০-৫০ % এ উন্নীত হয়েছে। ভবিষ্যতে এ হার আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বাজার সম্প্রসারণে আয় বাড়ানো না গেলে সমস্যার সৃষ্টি হবে। বিক্রয় বৃদ্ধি করে পার ইউনিট কস্ট বাড়াতে টেকনোলোজি ব্যবহার বাড়াতে হবে। দুর্গম এলাকার উদ্যোক্তাদের নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বাড়াতে, আধুনিকায়ন করতে সরকারের বাস্তব পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় এসএমইরা দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল করতে সহায়তা করবে।