Sunday, November 24, 2024
More

    সর্বশেষ

    মোবাইল টাওয়ার ক্ষতিকর মাত্রায় নেই – বিটিআরসি

    বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-এর স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার মোঃ আমিনুল হাসান বলেছেন সম্প্রতি বিটিআরসি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশনের মাত্রা নিয়ে জরিপ করেছে তাতে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, টাওয়ারের রেডিয়েশন আন্তর্জাতিক ও বিটিআরসির বেধে দেয়া মানদণ্ডের অনেক নিচে আছে, তাই তা নিয়ে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। রাজধানীর এক হোটেলে টাওয়ার রেডিয়েশনের মানদণ্ড ও সাম্প্রতিক জরিপ শীর্ষক এক আলোচনায় আমিনুল হাসান এসব কথা বলেন।

    বিটিআরসির উদ্যোগে ও এমটবের আয়োজনে এই আলোচনায় আরো অংশ নেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ সত্য প্রসাদ মজুমদার, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম শহিদুল আলম, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক ড: শামসুজ্জোহা এবং হুয়াওয়ে টেকনলজিস (বাংলাদেশ)-এর মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক এস এম নাজমুল হাসান। এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবঃ)-এর সঞ্চালনায় এ আলোচনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও মোবাইল শিল্প খাতের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    বিটিআরসি কমিশনার বলেন, “আমরা দেশের অনেকগুলো স্থানে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন জরিপ সম্পন্ন করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। আপনারা জানেন যে টাওয়ারের রেডিয়েশনের ফল অত্যন্ত সন্তোষজনক পাওয়া গেছে যা আমরা নিয়মিতভাবে বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করি। আপনি যদি ভবিষ্যতে আরো উন্নততর সেবা পেতে চান তাহলে আরো বেশি মোবাইল সাইট স্থাপনের বিকল্প নেই। টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তি আছে, এটা ভিত্তিহীন। আমরা সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বা ভবন মালিকদের কাছে নিশ্চিত করছি যে আপনারা ভয় পাবেন না। দেশের উচ্চ আদালত আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছেন। আমরা খুব দ্রুতই আদালতের কাছে রিপোর্ট পেশ করবো, বলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।

    আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক ড: শামসুজ্জোহা বলেন, “রেডিয়েশন দুই প্রকার – আয়োনাইজিং এবং নন-আয়োনাইজিং। এর মধ্যে আয়োনাইজিং রেডিয়েশন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যেমন পারমাণবিক বর্জ্য, সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে, গামা-রে কিংবা এক্স-রে। এরা শরীরের মধ্যে ডিএনএ পর্যায়ে পরিবর্তন আনতে সক্ষম। অপরদিকে মোবাইল রেডিয়েশন নন-আয়োনাইজিং। এর শক্তি খুব কম, ফলে এর কোন স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। মোবাইল টাওয়ারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নির্দিষ্ট মানদণ্ড আছে এবং আমরা জরিপে পেয়েছি যে দেশের মোবাইল টাওয়ারগুলোর রেডিয়েশন নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে আছে। আমরা ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা, সুন্দরবন, ফেনী, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, জামালপুর ইত্যাদি অনেক এলাকায় জরিপ চালিয়েছি এবং এ পর্যন্ত কোথাও নির্ধারিত সীমার বেশি রেডিয়েশন পাইনি।”

    সুপরিকপ্লিত যথেষ্ট সংখ্যক টাওয়ার থাকলে তা কম ক্ষমতার রেডিয়েশন ছড়াবে এবং তা তত বেশি নিরাপদ। আমরা আশা করি এই টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে জনমনে যে বিভ্রান্তি আছে তা দূর হবে। জরিপ করতে গিয়ে কয়েকটি টাওয়ারের ওপরে পাখির বাসা দেখেছি। পাখিরা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আছে এবং বংশ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। অনেক ভবনের ছাদে বাগান করা হয়েছে এবং তাতে খুব ভালো সব্জি ফলন হচ্ছে।

    অধ্যাপক ডঃ সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, বিটিআরসি সারাদেশে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে জরিপ করছে এবং দেশে রেডিয়েশনের লেভেল আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অনেক নিচে আছে, এটা খুবই সন্তোষজনক ব্যপার। টাওয়ার নিয়ে যে বিভ্রান্তি আছে তা দূর হওয়া দরকার। কারণ আমাদের প্রযুক্তি নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তিনি বিটিআরসির কাছে আহ্বান জানান যে তারা যেন এই জরিপ অব্যাহত রাখে এবং জনমনে যে বিভ্রান্তি আছে তা দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়। প্রতিনিয়ত জরিপ করা এবং তার ফল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের কাছে প্রকাশ করা হলে এই বিভ্রান্তি দূর হয়ে যাবে।

    ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবঃ), বলেন, সামনে যখন ফাইভ-জি আসবে তখন আমাদের অনেক বেশি সাইটের প্রয়োজন হবে। তাই শুধু শুধু আতংকিত হয়ে প্রযুক্তিকে রুদ্ধ করার কোন যুক্তি নেই। তাহলে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়বো।“ “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে শুধু অনুমানের ভিত্তিতে ছড়ানো হচ্ছে যে মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন মানুষ বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

    সর্বশেষ

    পড়েছেন তো?

    Stay in touch

    To be updated with all the latest news, offers and special announcements.