মঙ্গলগ্রহ হতে পারে মানুষের নতুন আবাসস্থল। অন্তত তেমনটাই বিশ্বাস করেন মার্স ওয়ানের কো-ফাউন্ডার এবং সিইও বাস ল্যান্সডর্প।
ডেনমার্কের এই বিনিয়োগকারী আর তার মার্স ওয়ান টিম তাই পরিকল্পনা করেছে মঙ্গলগ্রহে মানুষের কলোনি গড়ে তোলার। তবে মঙ্গলে মানুষের এ যাত্রা হবে একমুখী, অর্থাৎ শুধুমাত্র যাওয়া যাবে কিন্তু ফিরে আসা যাবে না।
প্রথম যে মানুষেরা মঙ্গলে যাবে তাদের সেখানে থাকতে হবে, বললেন ল্যান্সডর্প। সেখানে থাকার ব্যাপারটা বিশ্বাসযোগ্য করতেই এরকম পদক্ষেপ নেয়া।
পরিকল্পনা করা হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে মঙ্গলগ্রহে কিছু রবোটিক রোভার পাঠানো হবে সেখানে বসবাসের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বের করার জন্য। জায়গা ঠিক করার পরই সেখানে স্পেস স্যুটসহ বেঁচে থাকার অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাঠানো হবে।
সেগুলো পৌঁছে যাবে ২০২২ সালের মধ্যেই । এরপর ২০২৫ সালে সেখানে পাঠানো হবে মানুষ।
ল্যান্সডর্প জানান, মানুষ পৌঁছানোর আগে কয়েকবছর তারা সেখানে সব ধরণের প্রযুিক্ত ব্যবহার করে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা বুঝতে চান। যত সময় গড়াবে তাদের এই মিশনটির সম্ভাবনা ততই বাড়বে বলে তার ধারণা।
একবার সেইখানে সব ঠিকঠাক হয়ে গেলেই মঙ্গলে পাঠানো হবে ৪ জন মানুষ, ২ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী। তারা একটি বায়ুরোধী কমপ্যাক্ট স্পেস স্টেশনে যাবে যাতে ৭-৮ মাসের খাবার, পানি আর অন্যান্য রসদও দেয়া হবে।
লাইফ সাপোর্ট ইউনিটগুলো তাদের প্রয়োজনীয় এনার্জি পাবে সোলার প্যানেল থেকে। এগুলো লিভিং ইউনিটের মধ্যে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, নাইট্রোজেন আর আর্গন সরবরাহ করবে। লিভিং ইউনিটটা করা হবে ৫৩৮ স্কয়ার ফুটের যেখানে মানুষের স্বভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়ার সকল বন্দোবস্ত করা থাকবে।
এখানে একটি এয়ার লক সিস্টেমও থাকবে যাতে মানুষেরা বের হতে আর ঢুকতে পারে সহজে। চাঁদে নভোচারীরা যে স্পেস স্যুট পরেছিলেন এখানেও ক্রু’রা সে ধরণের স্পেস স্যুটই পরবেন। মঙ্গলের-৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে এ স্পেস স্যুট সহজেই তাদের রক্ষা করবে।
আরেকটা ব্যাপার নিয়ে সংশয় আছে মঙ্গলে নভোচারীদের কতোটুকু খাবার লাগতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে নভোচারীদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে ধারণা করেছেন যে মঙ্গলে বসবাস করা মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন ৩ হাজার ক্যালরি প্রয়োজন।
এতো খাবার সিমীত জায়গায় চাষ করা কঠিন। তাই ঠিক করা হচ্ছে পৃথিবী থেকেই খাবার পাঠানো হবে মঙ্গলে।
তবে মঙ্গলে চাষবাস করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে পানি বের করে তা কাজে লাগিয়ে চাষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।