তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর জায়ান্ট টিএসএমসি তাদের প্রথম মার্কিন কারখানার নির্মাণ কাজ স্থগিত করেছে বলে জানা গেছে। অ্যারিজোনার ফিনিক্স শহরে নির্মিতব্য কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, যা ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে।
ট্যারিফ উদ্বেগে টেক ইন্ডাস্ট্রিতে অস্থিরতা
ট্রাম্পের নির্বাচনী জয়ের পর থেকেই প্রযুক্তি শিল্পে চাপা উত্তেজনা চলছে। এর প্রধান কারণ হল তার প্রস্তাবিত ট্যারিফ নীতি, যা সরাসরি পণ্যের খরচ বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এই নীতির ফলে গ্রাহকদের জন্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি অনিবার্য।
ট্রাম্প তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প এবং টিএসএমসি সম্পর্কে বেশ কিছু নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তার মতে, টিএসএমসি “আমাদের ৯৫ শতাংশ ব্যবসা চুরি করে তাইওয়ানে স্থানান্তর করেছে।” ট্রাম্পের লক্ষ্য হল কোম্পানিগুলোকে উৎপাদন প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা, যদিও এটি বাস্তবায়ন কিছুটা জটিল হতে পারে।
ফিনিক্স কারখানা: ভবিষ্যতের প্রযুক্তির আশা
টিএসএমসি এর পরিকল্পনা ছিল ফিনিক্সে তিনটি কারখানা নির্মাণ করার, যেখানে তৃতীয় কারখানায় ২ ন্যানোমিটার চিপসেট তৈরির কাজ চলতি দশকের শেষের দিকে শুরু হতে পারে। এই প্রকল্পটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির প্রসার ঘটানোর একটি বড় উদ্যোগ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে এখন গুজব রয়েছে যে এটি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে। টিএসএমসি এর এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিমালার উপর নির্ভর করে ব্যবসার পরিকল্পনা করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন-তাইওয়ান সম্পর্ক ও সম্ভাব্য প্রভাব
ট্রাম্প প্রশাসন যদি টিএসএমসি এবং তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ফিনিক্স কারখানা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র টিএসএমসি-এর উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল এবং মার্কিন মাটিতে টিএসএমসি-এর বিকল্প নেই।
টিএসএমসি-এর ফিনিক্স কারখানার নির্মাণ কাজ স্থগিত হওয়া মার্কিন-তাইওয়ান সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। ট্রাম্পের নীতির ফলে প্রযুক্তি শিল্প কীভাবে প্রভাবিত হয়, তা দেখতে সবাই উদগ্রীব।
সূত্র : ফোনএরিনা