প্রচারণা ডটকম : ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সেবা স্ন্যাপচ্যাটের মূল কোম্পানি স্ন্যাপ ইনকর্পোরেটেড ২০ শতাংশ কর্মী ছাটাই করতে যাচ্ছে। এ বছরেই শেয়ার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, বিদ্যমান ছয় হাজার চারশ’র বেশি কর্মীর মধ্যে ২০ শতাংশকে ছাটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে স্ন্যাপ; বুধবারেই শুরু হচ্ছে এ ছাটাই প্রক্রিয়া। খবরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
স্ন্যাপ কর্মী ছাটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে। তবে, এতে কোম্পানির নির্দিষ্ট কয়েকটি বিভাগ অন্যদের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আভাস মিলেছে।
স্ন্যাপের মিনি অ্যাপ এবং গেইম নির্মাতা দলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছে ভার্জ। ২০১৭ সালে ‘সোশাল ম্যাপিং’ অ্যাপ ‘জেনলি’ কিনেছিল স্ন্যাপচ্যাট। এই অ্যাপটি এতোদিন স্ন্যাপের অধীনে স্বাধীনভাবে কাজ করলেও নির্মাতাদলের একটি বড় অংশ চাকরি খোয়াতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সাইটটি।
এ ছাড়াও কর্মী হারাতে যাচ্ছে স্ন্যাপের হার্ডওয়্যার বিভাগ। পিক্সি ক্যামেরা ড্রোন এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর) পণ্য নির্মাণের দায়িত্বে ছিল এ দলটি। বাজারে পিক্সি ক্যামেরা ড্রোনের উপস্থিতি ছিল মাত্র কয়েক মাসের; সম্প্রতি ড্রোনটির উৎপাদন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।
কোম্পানির বিজ্ঞাপন বিভাগও ঢেলে সাজানোর বিষয়টি উঠে এসেছে ভার্জের প্রতিবেদনে। স্ন্যাপের চিফ বিজনেস অফিসারের পদ ছেড়ে নেটফ্লিক্সের বিজ্ঞাপন বিভাগের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন জেরেমি গোরম্যান।
কর্মী ছাটাই প্রসঙ্গে জানতে স্ন্যাপের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ভার্জ। এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
স্ন্যাপের কর্মী ছাটাই পরিকল্পনা অপ্রত্যাশিত কিছু নয় বলে জানিয়েছে ভার্জ। বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শেয়ার বাজারে স্ন্যাপ শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ। মে মাসেই কোম্পানিটি নতুন নিয়োগের গতি কমিয়ে খরচ কমানোর সম্ভাব্য উপায় খোঁজার ঘোষণা দিয়েছিল।
এরপর বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। তৃতীয় প্রান্তিকের সম্ভাব্য আয় নিয়ে ভবিষ্যাদ্বাণী করাও এড়িয়ে গেছে কোম্পানিটি।
মহামারী চলাকালীন প্রযুক্তিখাতের অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মতো প্রচুর নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছিল স্ন্যাপ। ২০২০ সালের মার্চ মাসে তিন হাজার ৪২৭ জন কর্মী ছিল কোম্পানিটির। আর এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের শেষে কোম্পানির কর্মী সংখ্যা ছিল ছয় হাজার ৪৪৬ জন।
২০২১ সালে মে মাসে ৫০ কোটি ডলার খরচ করে ওয়েভঅপটিক্স নামের একটি কোম্পানিও কিনে নিয়েছিল স্ন্যাপ।
ভার্জ জানিয়েছে, মহামারী চলাকালীন ব্যবসা ভালো চললেও মহামারীর শেষে বাজারে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছেনা স্ন্যাপ ইনকর্পোরেটেড। বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কা এবং বিজ্ঞাপনী খাতে অ্যাপল কড়াকড়ি আরোপ করায় বিপাকে পড়েছে কোম্পানিটি।
গেল বছরগুলোতে স্ন্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বেড়েছে স্থিতিশীল হারে। বর্তমানে স্ন্যাপচ্যাটের ব্যবহারকারী সংখ্যা প্রায় ৩৪ কোটি ৭০ লাখের কিছু বেশি। কিন্তু ২০১৭ সালে পাবলিক লিমিডেট কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে কোম্পানিটি লাভের মুখ দেখেছে কেবল একবার।