এলিফ্যান্ট রোড কমপিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির (ইসিএস) উদ্যোগে এবং সাউথ বাংলা কমপিউটার্সের সহযোগিতায় গতকাল (৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ‘‘পিঠা উতসব’’ এর আয়োজনে ইসিএসের আগাম কার্যনির্বাহী পরিষদের (ইসি) নির্বাচনের ঘোষনা দেয়া হয়। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ইসিএসের ২০২১-২২ মেয়াদের ১১ সদস্য কমিটির দ্বিবার্ষিক ইসি নিরবাচন।
শীত আসে আর সেই সঙ্গে হাজির হয় পিঠা উতসব। পিঠার সেই মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে মূলত ঋতুর প্রথম ভাগ থেকে। বাঙালিরা চিরকালই অতিথি পরায়ণ। সামাজিক বন্ধনটিও শক্ত তাদের। কাউকে না বলে তারা খায় না। সবাই মিলে এক জায়গায় হবে। খাবে, আনন্দ করবে সে আনন্দের ভাগ সবাই পাবে। আর সেই লক্ষেই আয়োজন করা হয় এলিফ্যান্ট রোড কমপিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির (ইসিএস) সদস্যদের জন্য ‘‘পিঠা উতসব’’। বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য প্রতি বছরই পিঠা উতসবের আয়োজন করে থাকে ইসিএস। এ ছাড়াও সংগঠনটি প্রতি বছর আয়োজন করে সদস্যবান্ধব বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঈদ পূর্ণমিলনী, বার্ষিক বনভোজন, বিজয় উতসবসহ নানা ধরণের আয়োজন।
ইসিএসের উদ্যোগে আয়োজিত পিঠা উতসবে উপস্থিত ছিলেন মাল্টিপ্ল্যান কমপিউটার সিটি সেন্টারের সভাপতি তৌফিক এহেসান, সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) সাবেক সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার, বিসিএসের কোষাধ্যক্ষ ও ইসিএসের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, বিসিএসের পরিচালক রাশেদ আলী ভূঁইয়া, বিসিএসের সাবেক পরিচলক ও ইসিএসের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন, আলপনা প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মির রফিকুল ইসলাম বিল্লু, ইসিএসের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো.তাছলিম, কোষাধ্যক্ষ মো. মাহফুজুল আলম, আইটি সম্পাদক মো. তানজিল, নির্বাহী সদস্য মো. মনু মিয়া (মনির হসেন), নির্বাহী সদস্য্ মঈন উদ্দিন মজুমদার সোহাগসহ ইসিএসের প্রায় তিনশতাধিক সদস্যবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ইসিএসের সভাপতি মো. আমির হোসেনসহ তার পরিবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। মো. আমির হোসেন এখন কিছুটা ভালোর দিকে রয়েছেন বলে জানা যায়। কিন্তু তার বড় ছেলে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসি্ইউ) ভর্তি রয়েছেন। তিনি সকলের কাছে তার সন্তান ও পরিবারের সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়েছেন করোনা দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য।
পিঠা উতসবে প্রচলিত পিঠার মধ্যে ছিলো তেলের পিঠা, চিতল পিঠাসহ জিলাপি, পেয়াজু, পেপে, সিঙ্গারা, পেয়ারা, আপেল, চটপটি, ফুসকা ও কফি পিঠা মুখে তোলেন সবাই। আকাশছোঁয়া আনন্দ। এই উল্লাস বহাল থাকুক। পিঠা উতসবে ইসিএসের প্রায় তিনশতাধিক সদস্যের সমাগম ঘটে। সদস্যদের সমাগমে উতসব প্রাণচাঞ্চল্য পায়। ষড়ঋতুর এ দেশে শীত অন্যরকম এক ঋতু। আর এ শীতেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। শহুরে সমাজে সেই ঐতিহ্যের ধারা কিছুটা মলিন হয়ে গেলেও ইসিএসের এমন পিঠা উতসবের আয়োজন বাঙালি ঐতিহ্য রীতিনীতিকে কিছুটা মনে করিয়ে দেয়। উতসবের আমেজ লাগে মনে।
পিঠা উতসব নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, পিঠা উতসবের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের বাঙালিত্বকে খুঁজে পাই। নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে রাখছে এমন প্রচেষ্টা। ফেসবুকেও কেউবা তুলে ধরেন কারও পিঠা আয়োজনের দৃশ্যটি। সেই লক্ষ্য থেকে অনুষ্ঠান চলে নিরন্তর। প্রতি বছরই আমরা পিঠা উতসব করে থাকি। ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে শীত আমাদের অনেকের কাছেই প্রিয়। বাঙালি ঐতিহ্যগত কারণে এ ঋতুর সঙ্গে পিঠার অন্যরকম যোগসূত্র আছে। তাই শীতকে আমরা বরণ করে নিই এই পিঠা উতসবের মাধ্যমে। তাছাড়া পিঠা উতসবের মাধ্যমে ইসিএসের সদস্যদের মাঝে মিলনমেলা তৈরি হয়। এ জন্য সাউথ বাংলা কমউিটার্সকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের সহযোগিতা করার জন্য।
ইসিএসের আগাম নির্বাচন প্রসঙ্গে কামরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান কমিটির সর্বশেষ সাধারন সভায় সিদ্বান্ত হয় মেয়াদ শেষ হওযার আগেই আগাম ইসি নির্বাচন করার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৮ ডিসেম্বর ইসিএসের ২০২১-২০২২ মেয়াদের ১১ সদস্য বিশিষ্ট ইসি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান ইসি কমিটির মেয়াদ শেষ হওযার কথা আগামী বছর মার্চ মাসে। বর্তমান কমিটি আগামী ১৫ নভেম্বর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। নির্বাচন হবে উতসমুখর পরিবশে যা বিগত সময়গুলোতে হয়ে আসছে। নতুন নেতৃত্ব আগামীতে ইসিএসের হাল ধরবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তাই তিনি সকল সদস্যদের কাছে আহবান করছেন ইসিএসকে সাংগঠনিকভাবে গতিশীল ও বেগবান করার লক্ষে নতুন মুখ এগিয়ে আসবে। গনতান্ত্রিক পন্থায় সদস্যদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে সেই প্রত্যাশাও করেন তিনি।
এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাংলাদেশের কমপিউটার ব্যবসা শুরু হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে ছোট বড় ছাব্বিশটি (২৬) মার্কেটে কমপিউটার ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এলিফ্যান্ট রোড হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের আইসিটি ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় বাজার, যা এখন সর্ববৃহত কমপিউটার ব্যবসায়ীক জোন হিসেবে পরিচিত। এখান থেকেই সারা বাংলাদেশের কমপিউটার পন্যের চাহিদার প্রায় ষাট (৬০) শতাংশেরও অধিক সরবরাহ হয়ে থাকে। সারা বাংলাদেশের কমপিউটার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এলিফ্যান্ট রোডের ব্যবসায়ীদের রয়েছে চমতকার সম্পর্ক।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে ও আইসিটি খাতের উন্নয়নে এলিফ্যান্ট রোডের কমপিউটার ব্যবসায়ীরা সহযোগী হিসাবে সুদীর্ঘকাল যাবত কাজ করে আসছেন। দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং সমগ্র বাংলাদেশের কমপিউটার ব্যবসায়ীদের কল্যাণের জন্য এলিফ্যান্ট রোড কমপিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ইসিএস) কাজ করে আসছে।