ক.বি.ডেস্ক: শেষ হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এর সঙ্গে শেষ হলো ‘‘স্টোরিজ অব হিরো’’ ক্যাম্পেইন। গত ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধসহ জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা বাস্তবের নায়কদের খোঁজে এ ক্যাম্পেইন শুরু করে অপো ও বুরো বাংলাদেশ। এই তালিকায় রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা, নারী উদ্যোক্তা, সংগ্রামী মা, সুবিধাবঞ্চিত শিশু, ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক শ্রমিক ও মেহনতী মানুষের গল্পকথা। যারা নিজেদের জীবন-সংগ্রামের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে অবদান রাখছেন নিরন্তর।
অপো গ্যালারির জন্য আয়োজিত ‘স্টোরিজ অব হিরোইক পিপল’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী এই দুই সময়ের বীরদের এক ফ্রেমে ধরে রাখতে যাচ্ছে প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। উদ্দেশ্য ছবির মাধ্যমে মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে নতুন প্রজন্মকে তাদের সংগ্রামের গল্প জানানো। কারণ অ্যালবামের একেকটি ছবি এক একটি যুদ্ধ জয়ের গল্প।
প্রথম ধাপে নির্বাচিত তিন মুক্তিযোদ্ধা হলেন জহির উদ্দিন জালাল, মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস ও লুবনা মরিয়ম। জহির উদ্দিন জালাল ও মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও পাকিদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। শত্রুপক্ষকে আঘাতে আঘাতে পর্যদুস্ত করে ফেলেন। পাকিদের অমানুষিক নির্যাতনেও দমে যাননি তারা। সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে স্বাধীনতা উপহার দেন। পরবর্তীতে তাদের বীরত্ব গাঁথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ না করলেও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন লুবনা মরিয়ম। এমনকি তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিত্সায় দিনরাত পরিশ্রম গেছেন। সেই ঘটনার পঞ্চাশ বছর পরও আজ তিনি মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলন অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে।
বর্তমানের আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে যারা কাজ করে যাচ্ছেন তাদের দিকে। প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন থেকে উত্সাহিত হয়েই তারা বর্তমান বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। বর্তমানের তিন হিরো হলেন- দুলাল স্যার, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও সাজেদুল ইসলাম।
৬৫ বছর বয়সী দুলাল স্যার নিজ এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ নির্মাণ করেন। অনির্বাণ বিদ্যালয়ে তিনি নিজেও শিক্ষার্থীদের পড়ান। আর ৭০ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রাম্য ডাক্তার রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের বাড়ি খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায়। তিনি একাত্তরে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিত্সা দিতেন। সেই থেকে আজ অবদি তিনি মানব চিকিত্সায় আত্মনিয়োগ করে যাচ্ছেন। দরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য বিনা মূল্যে চিকিত্সা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে সাজেদুল ইসলাম স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে যুক্ত রেখেছেন। তিনি নিজে রক্ত দেন ও অন্যদের রক্ত দিতে উত্সাহিত করেন। করোনাকালীন সময়ে তিনি গোপালগঞ্জ বন্ধু মহলের সঙ্গে একত্রিত হয়ে মুমুর্ষু রোগীদের বিনা মূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে সর্বমহলে প্রশংসা কুঁড়ান।
অপো জানায়, এসব বাস্তবের বীরদের গল্প ভার্চুয়াল অনলাইন আর্ট কালেকশন অপো গ্যালারিতে সংরক্ষণ করা হবে। আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি তাদেরকে সম্মানিত করবে অপো ও বুরো বাংলাদেশ। আর যাদের ক্যামেরায় (রুবাবাতুল জান্নাত, সীমান্ত্ মন্ডল ও নিপা বেপারী) তিনটি গল্প উঠে তাদেরকে সর্বশেষ মডেলে স্মার্টফোন রেনো ৬ ও আইওটি ডিভাইস দেয়া হবে।