গতকাল (২৯ আগস্ট) এক অনলাইন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ওপেন সোর্স হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্বখ্যাত ডেভেলপমেন্ট বোর্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আরডুইনো তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আরডুইনো অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান কোড১৯, বাংলাদেশ ভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এবং আইওটি ফর বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে কাজ করা শুরু করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথী ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।বিশেষ অতিথি ছিলেন আরডুইনোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিটিও ডেভিড কুয়ার্তিলেস।উপস্থিত ছিলেন আইওটি ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইমরান মো. আমিন, আরডুইনোর প্রো/আইটি বিজনেস ডেভলপার মাসিমো স্যাখ্যি, কোড১৯ এর পরিচালক ইমতিয়াজ ফারহান বিন হাবীব। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডাটাসফট সিস্টেমসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহবুব জামান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং সঞ্ঝালনা করেন বাংলাদেশে ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যেই মূহুর্তে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ডিজিটাল ইনোভেশন ইকোসিস্টেম তৈরী করতে এই পদক্ষেপ এই গতিকে আরও প্রভাবিত করবে। আরডুইনোর মত জনপ্রিয় এই প্ল্যাটফর্মকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দোড়গোড়ায় এনে দেবে। এটি বাংলা ভাষায় অনুমোদিত দক্ষ মানব সম্পদ তৈরী করতে সহায়ক হবেও তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, শুধু কোড লেখার জন্য আমাদের আঙ্গুলের ব্যবহারই যথেষ্ট নয়, কাজে লাগাতে হবে হাত দুটোকেও। হার্ডওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে খুজতে হবে নতুন সম্ভাবনা। আরডুইনোর মত আন্তর্জাতিক কার্যক্রম বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় চালু হয়েছে এতে করে দেশের সব স্তরের শিক্ষার্থীরা আরডুইনো শিক্ষায় আরও বেশী আগ্রহী হবে। এখন আরডুইনোর অন্যান্য বোর্ড, উপকরণ ও সফটওয়্যার নিয়েও কাজ করতে পারবে। তিনি আশা করেন হয়তো আরডুইনোর নতুন কোন বোর্ড বা প্রোডাক্টের ডিজাইন ও উন্নয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্রথীরা সরকসরি সম্পৃক্ত হবে। তিনি বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে আগামীতে দেখতে চান।
ডেভিড কুয়ার্তিলেস বলেন, আরডুইনো যেকোন জটিল প্রযুক্তিকে সকলের জন্য সহজ বোধগোম্য করতে সাহায্য করে। আরডুইনো বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানীকারক দেশ হিসবে প্রতিষ্ঠিত করতে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীতে সাহায্য করবে।আরডুইনোর সার্টিফিকেশন প্রোগ্রামে এখন থেকে যুক্ত হয়েছে বাংলা ভাষা। বিশ্বের আর আটটি ভাষার সঙ্গে বাংলাভাষাতেও এই কারিগরী সনদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে। এই সংস্থা দেশে কারিগরী লোকবল তৈরি এবং ২০২৫ সালে ইন্টারনেট অব থিংসের হার্ডওয়্যার তৈরির হাব হিসেবে বাংলাদেশের সহযাত্রী হিসেবে কাজ করবে।
ড. ইমরান মো. আমিন বলেন, আরডুইনো শুধু একটি বোর্ড না কিংবা হার্ডওয়্যার টুল না, এর শুরুর দিকে যে মূলমন্ত্র ছিলো তা দেশের আইটি স্কিলের উন্নয়নে এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে সহায়ক হবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে রোবটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস প্রভৃতি বিষয়ে ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরডুইনোর এই যাত্রা দেশকে আরো সম্ভাবনাময় এবং সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ইমতিয়াজ ফারহান বিন হাবীব বলেন, প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো একসঙ্গে কাজ করলে দেশের এবং সমাজের প্রযুক্তিগত বিকাশ ঘটানো সম্ভব। এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের আরডুইনো শিক্ষার্থী এবং পেশাদারদের জন্য সহায়ক হবে যাতে তারা তাদের আইটি দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে। ইন্টারনেট অব থিংস এবং আরডুইনো এর মত ডিজিটাল ডিভাইন প্রস্তুতকরণ এবং রপ্তানীতে বাংলাদেশের রয়েছে অমিত সম্ভাবনা।