আন্তর্জাতিকভাবে নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে ১৬ দিনের কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হলো ১৬ দিনের কর্মসূচী। মূলত নারীর প্রতি অনলাইন সহিংসতা কিংবা সাইবার বুলিং রোধে সচেতনতা তৈরী করতে আয়োজিত হচ্ছে এ আয়োজনগুলো। আন্তর্জাতিকভাবে আয়োজিত এ আয়োজনের এবারের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে ‘‘বিশ্বকে কমলা করুন: তহবিল,প্রতিক্রিয়া,প্রতিরোধ,সংগ্রহ!’’
দক্ষিণ আমেরিকার ডমিনিকান রিপাবলিকের স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর প্যাট্রিয়া,মারিয়া তেরেসা ও মিনার্ভা মিরাবেল নামে তিন বোনকে হত্যা করা হয়। নারীর ওপর এই নির্যাতন সারাবিশ্বে,বিশেষ করে নারী সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৯৮১ সালে ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ আমেরিকার নারীদের এক সম্মলনে এই দিন কে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে এই দিনটি স্বীকৃতি পায়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২৫ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং পাশাপাশি ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশেও প্রতিবছরের মতো এই ১৬ দিনকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ দিবস পক্ষ হিসেবে পালন করে আসছে ‘টেইক ব্যাক দা টেক’। এটি একটি বিশ্বব্যাপী প্রচারণা অভিযানের অংশ যা নারীদের বিরুদ্ধে প্রযুক্তির সহায়তার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে এবং তার সমাধানে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে নারী সহিংসতা বিশেষ করে অনলাইনে নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাজ করে আসছে টেইক ব্যাক দা টেক।
এ বছরেও টেইক ব্যাক দা টেক নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ দিবস পক্ষ পালনের জন্য নানা রকম কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও অন্যান্য সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে অনলাইন সেশন,সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা,বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে তা প্রচার করা।সাইবার বুলিং কিংবা নারীর প্রতি অনলাইন সহিংসতা রোধে নারীর সচেতনতা তৈরী করাই টেইক ব্যাক দ্যা টেকের মূল লক্ষ্য।
শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বাইরেও সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইনেও নারীদের প্রতি সহিংসতার সংখ্যা বাড়ছে। অনলাইনে হয়রানির শিকার নারীদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে। শুধু ঢাকা নয়,ঢাকার বাইরেও এই সংখ্যা এমনই। এসব নারীর মধ্যে বেশিরভাগ যৌন হয়রানি,হ্যাকিং,সাইবার পর্নোগ্রাফি ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হন। এসব অভিযোগের মধ্যে হ্যাকিং ২০ শতাংশ,ফেক আইডি ২০ শতাংশ,হয়রানি/মানহানি ১৮ শতাংশ,সাইবার পর্নোগ্রাফি ১৪ শতাংশ,মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা ১৪ শতাংশ,ব্ল্যাকমেইল/চাঁদাবাজি ৭ শতাংশ,সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ১ শতাংশ ও অন্যান্য ৬ শতাংশ।
#নারীর_প্রতি_সহিংসতা_বন্ধ_হোক