ক.বি.ডেস্ক: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অগ্রিম অর্থ নেয়ার পাঁচদিনের মধ্যে ক্রেতাকে পণ্য সরবরাহের বাধ্যবাধকতা রেখে ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ চুড়ান্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিক্রেতার অবস্থান একই শহরে হলে পাঁচদিন ও ভিন্ন শহরে হলে পণ্য সরবরাহে সর্বোচ্চ দশদিন সময় পাবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্দেশিকাটি ভেটিংয়ের জন্য খুব শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সম্প্রতি এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ তথ্য জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি এবং ই-ক্যাব প্রতিনিধি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ক্রেতা যাতে কোনোভাবে প্রতারিত না হয়, সেজন্য নির্দেশিকায় বিভিন্ন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। কোনো কোম্পানি এসব নিয়ম না মানলে সরকার ওই কোম্পানি বন্ধ করে দিতে পারবে, ক্রেতারাও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আদালতে মামলা করতে পারবে। ডিজিটাল কমার্স পরিচালনায় স্বচ্ছতা, দায়বদ্বকা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য এবং লক্ষ থেকে এটি প্রণনয় করা হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা, ডিজিটাল ব্যবসার প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ডিজিটাল ব্যবসায় শৃঙ্খলা এনে ভোক্তার আস্থা বাড়ানোও এর লক্ষ্য।
চূড়ান্ত নির্দেশিকায় অর্থ পরিশোধের বিষয়ে বলা হয়, সম্পূর্ণ মূল্য গ্রহণের পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি পারসন বা প্রতিষ্ঠানের হস্তান্তর করার মতো অবস্থায় নেই, এমন পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যমূল্যের ১০ শতাংশের বেশি অগ্রিম নেয়া যাবে না তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত এসক্রো সার্ভিসের মাধ্যমে শতভাগ পর্যন্ত অগ্রিম গ্রহণ করা যাবে।
নির্দেশিকাটি জারির পর ডিজিটাল পণ্য বিক্রেতাদের ওয়েবসাইট, মার্কেটপ্লেস বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবাক্রয়-বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে পণ্যের যাবতীয় তথ্য ও সংশ্লিষ্ট শর্তাবলী সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এসব শর্তে পণ্যমূল্য ফেরতের শর্তাবলি, পরিবর্তন, সরবরাহের সময়সীমা সবকিছু স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। ডিজিটালকমার্সের মাধ্যমে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা নেটওয়ার্ক ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না।
এ ছাড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল মাধ্যমে নেশাসামগ্রী, বিস্ফোরক দ্রব্য বা অন্য কোনো নিষিদ্ব সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। ডিজিটাল মাধ্যমে ঔষধ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। ক্রয়- বিক্রয়ের সময় কোনো ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন হলে আগেই ক্রেতার অনুমতি নিতে হবে। সব ধরণের ডিজিটাল ওয়ালেট, গিফট কার্ড, ত্যাশ ভাউচার বা অন্য কোনো মাধ্যম, যা অর্থের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে। ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো ধরণের আর্থিক ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলা্দেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে। ক্রেতাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো পণ্য কেনার জন্য বাধ্য করা যাবে না। সব ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায়ীকে ট্রেড লাইসেন্ন, ভ্যাট নিবন্ধন, টিআইএন, ইউবিআইডি, পিআরএ ইত্যাদি নিতে হবে।
কৃতজ্ঞতায়: দৈনিক বণিক বার্তা