বন্ধুরা, আকাশ দেখতে তো আমাদের সবসময়ই ভালো লাগে, তাই না? আকাশের নীল রং আমাদের খুবই প্রিয়। কিন্তু সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে কোন বিশেষত্ব খেয়াল করেছো কি? নিশ্চয়ই করেছো। আর সেটা হচ্ছে, সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় সূর্য ও আকাশের খানিকটা অংশ গাঢ় লাল দেখায়। কিন্তু আকাশ কেন এরকম লাল হয়ে যায় তা কি কখনো ভেবে দেখেছো? সে কারণটাই বলছি শোনো।
আসলে এ পুরো ঘটনাটাই ঘটে আলোর বিক্ষেপণের জন্য। আগে বলে নেই, আলোর বিক্ষেপণ কি? যখন কোন আলোক তরঙ্গ কোন ক্ষুদ্র কণার উপর পড়ে, তখন কণিকাগুলো আলোক তরঙ্গকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে দেয়। একে বলা হয় আলোর বিক্ষেপণ বা Scatteringof Light। এই আলোর বিক্ষেপণের কারণেই বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো সৃষ্টি হয় এবং একারণেই বিভিন্ন রঙের উদ্ভব ঘটে। এটাও জেনে রাখো যে, নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম বলে তা সবচেয়ে বেশি বিক্ষেপিত হয় এবং লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি বলে তা সবচেয়ে কম বিক্ষেপিত হয়।
সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় সূর্য প্রায় দিগন্তরেখার কাছাকাছি থাকে এবং সূর্যালোক আমাদের চোখে পৌঁছতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের পুরু স্তর ভেদ করতে হয়। ফলে আলোকরশ্মিকে বায়ুমণ্ডলের ভাসমান ধূলিকণা, পানিকণা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় নীল প্রান্তের কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট বর্ণগুলো বিক্ষেপিত হয়, কিন্তু লাল প্রান্তের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় তা কম বিক্ষেপিত হয়, ফলে সরাসরি সেটি পৃথিবীতে চলে আসে। তাই আমরা ভোরের উদীয়মান সূর্য এবং সন্ধ্যার অস্তগামী সূর্যকে লাল দেখি। আশা করি এবার পুরো বিষয়টা তোমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।