অনেকেরই ধারণা এ যাবতকালে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয়া সর্ববৃহৎ স্থলজ প্রাণী হচ্ছে টি-রেক্স বা টাইরানোসরাস-রেক্স নামক ডাইনোসর। কিন্তু সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন এর চাইতেও বড় আকারের এক ডাইনোসর প্রজাতি ছিল পৃথিবীতে। এই বিশালাকৃতির ডাইনোসরটির নাম স্পাইনোসরাস। ফসিল গবেষক নিজার ইব্রাহীম ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একজন এক্সপ্লোরার। তিনি তার সহকারীদের সঙ্গে ইটালি এবং শিকাগোতে এই বিষয় নিয়ে কাজ করেন।
গবেষনার তিনি নিশ্চিত হয়েছেন খুঁজে পাওয়া ৫০ ফুট লম্বা এ ডাইনোসরটি সবচাইতে বড় টি-রেক্সটির চাইতেও প্রায় ১০ ফুট লম্বা। নতুন গবেষণায় এটাও বের হয়ে এসেছে, স্পাইনোসরাস শুধু সর্ববৃহৎ ডাইনোসরই ছিল না, সেই সঙ্গে এটি ছিল একমাত্র প্রজাতির শিকারি ডাইনোসর যে কিনা চার হাত-পায়ে চলতে পারতো। মাংসাশী এ বিশালাকায় বিলুপ্ত প্রাণীটির কঙ্কালটি সংরক্ষিত রয়েছে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের হেডঅফিসে।
২০০৮ সালে ইব্রাহীম গবেষণার কাজে মরক্কোর সাহারা মরুভূমিতে যান এবং সেখানে এক বেদুঈনের কাছ থেকে কিছু ফসিল ক্রয় করেন। তবে সে সময় ইব্রাহীম এগুলোর মূল্য বুঝতে পারেননি। পরবর্তী বছরেই, মিলানে অবস্থিত ইটালির ন্যাশনাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে তার কয়েকজন সহকর্মী তাকে স্পাইনোসরাসের একটি আংশিক কঙ্কাল দেখায়। ইব্রাহীম বুঝতে পারে তার আনা ফসিলগুলো এই ডাইনোসরটির সঙ্গে পুরোপুরি মিলে গেছে।
তবে স্পাইনোসরাসের আংশিক কঙ্কাল সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন স্ট্রমার ভন রাইখেনবাখ নামক একজন জার্মান ফসিল গবেষক। সাহারা মরুভুমির মিশরীয় অংশে গবেষণা চালাতে গিয়ে তিনি এ ফসিলগুলো খুঁজে পান। ওই ফসিলগুলো জার্মানির মিউনিখের একটি জাদুঘরে রাখা ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। ডাইনোসর নিয়ে বাচ্চাদের জন্য স্ট্রমারের লেখা একটি বই পড়েই মূলত নিজার ইব্রাহীম ছােটবেলায় ফসিল গবেষনায় অনুপ্রাণিত হন। বড় হয়ে ফসিল নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে ইব্রাহীম স্ট্রমারের আবিষ্কার সম্পর্কে আরও জানতে পারেন। স্ট্রমারের তোলা বিভিন্ন ছবি আর স্কেচ দিয়ে ইব্রাহীম এবং তার সহকর্মীরা স্পাইনোসরাসের একটি থ্রি-ডি মডেলও তৈরি করেছেন।