আমরা কিভাবে কোন শব্দ শুনতে পাই তা কি তোমরা কখনো জানার চেষ্টা করেছো? যদি শব্দের উৎসের দিকে খেয়াল করো তাহলে দেখতে পাবে যে বস্তুর কম্পনের ফলেই শব্দের উৎপত্তি হয়। আর এ কম্পন থেমে গেলে শব্দও থেমে যায়। তুমি যদি একটি গিটারের তারে আঙুল দিয়ে টোকা দাও তাহলে শব্দ সৃষ্টি হবে। লক্ষ্য করলে দেখবে যে, তারটি কাঁপছে। যখন তারের কম্পন থেমে যাবে তখন শব্দও থেমে যাবে। অর্থাৎ গিটারের তারের কম্পন হয়েছিলো বলেই শব্দ সৃষ্টি হয়েছিলো।
তাহলে বুঝতেই পারছো যে শব্দের উৎপত্তির জন্য মাধ্যমে কম্পন সৃষ্টি করতে হয়। কিন্তু কম্পন হলেই যে শব্দ শোনা যাবে তা কিন্তু নয়। শব্দের উৎসের কম্পাঙ্ক যদি 20 Hz এর চেয়ে কম বা 20,000 Hz এর বেশি হয় তাহলে যে শব্দ উৎপন্ন হবে তা আমরা শুনতে পাবো না। উৎসের কম্পাঙ্ক যদি 20 Hz থেকে 20,000 Hz এর মধ্যে সীমিত থাকে তাহলেই কেবল আমরা সে শব্দটা শুনতে পাবো। একে শ্রাব্যতার পাল্লা বা শ্রাব্যতার সীমা (Audibility Range) বলা হয়। যে তরঙ্গের কম্পাঙ্ক 20,000 Hz এর চাইতে বেশি তাকে শব্দোত্তর (Ultrasonic) তরঙ্গ বলে। আর কম্পাঙ্ক যদি 20 Hz এর চাইতে কম হয় তাকে শব্দেতর (Infrasonic) তরঙ্গ বলে। তবে এ শ্রাব্যতার পাল্লা শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যদিও ব্যক্তিবিশেষে এ সীমা কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে এ শ্রাব্যতার পাল্লা বা সীমা মানুষের চেয়ে অনেকটাই কম বা বেশি হয়ে থাকে। যেমনঃ কুকুরের শ্রাব্যতার ঊর্ধ্বসীমা হচ্ছে প্রায় 35,000 Hz । অর্থাৎ মানুষের শ্রাব্যতার সীমার ঊর্ধ্বের অনেক শব্দই কুকুর শুনতে পায়। তাই যে শব্দ আমরা বুঝতে পারি না তা কুকুর ভালোমতো উপলব্ধি করতে পারে। তাই,বাসা বাড়ি পাহারাতে কুকুর এক বিশ্বস্ত নাম। কিছু কিছু প্রাণীর শ্রাব্যতার ঊর্ধ্বসীমা এর চাইতেও বেশি থাকে। যেমনঃ বাদুরের ঊর্ধ্বসীমা প্রায় 1,00,000 Hz ।