বর্তমানে, সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ, অফিসের কাজ, পড়াশোনা ও বিনোদনের জন্য স্মার্টফোনে উদ্ভাবনী ফিচারের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। বিশেষ করে, তরুণরা সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্টফোনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পেতে চায়। সর্বস্তরের মানুষের কাছে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে অনেকদিন যাবত কাজ করছে দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এ লক্ষ্যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিবছরই স্যামসাং নিয়ে আসছে নিত্য নতুন স্মার্টফোন।
২০১৯ সালের শুরুতে স্যামসাং বাজারে আনে অসাম গ্যালাক্সি এ৫০ সিরিজ। সাশ্রয়ী মূল্যের ডিভাইসে ফ্ল্যাগশিপ ফোনের ফিচার সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্যালাক্সির উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সবার হাতের নাগালে আনাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। এই সিরিজের ফোনগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন গেমিংয়ের জন্য শক্তিশালী প্রসেসরযুক্ত করার পাশাপাশি ফ্যাশনসচেতন তরুণদের কথা মাথায় রেখে গুরুত্ব দেয়া হয় ট্রেনডি ডিজাইনে। এসব ফোনের প্রিমিয়াম লুক আর পারফরমেন্স ব্যবহারকারীদের নিঃসন্দেহে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে। মিডরেঞ্জের ফোনে আল্ট্রা ওয়াইড লেন্সের সঙ্গে ট্রিপল ক্যামেরা, অন স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট আনলকিং, ১৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধাযুক্ত ৪,০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি মুগ্ধ করে প্রযুক্তিপ্রেমীদের। কেবল ২০১৯ সালেই ফোনটির শিপমেন্টের পরিমাণ ছিলো ১.২ কোটি। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ অনুসারে, সে বছরের সবচেয়ে সফল স্মার্টফোন ছিলো এটি।
২০১৯ সালে ডিসেম্বরে স্যামসাং বাজারে নিয়ে আসে স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৫১। ৩০ হাজারেরও কম মূল্যের এই ৪জি ফোনের নজরকাড়া গ্লসি ডিজাইন, ৬.৫ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস সুপার অ্যামোলেড ইনফিনিটি ও ডিসপ্লে, অক্টা-কোর এক্সিনস ৯৬১১ প্রসেসর আর কোয়াড ক্যামেরা খুব কম সময়ের মধ্যে বাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ফলস্বরূপ, ২০২০ সালের প্রথম পাক্ষিকে বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের খেতাব অর্জন করে ফোনটি। এই পাক্ষিকে সারা বিশ্বে গ্যালাক্সি এ৫১ এর শিপমেন্টের পরিমাণ ছিলো ৬০ লাখ ইউনিট। গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ডিভাইসটি সমগ্র স্মার্টফোন বাজারের ২.৩ শতাংশ শেয়ার দখল করে। ২০২০ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফোন ছিলো গ্যালাক্সি এ৫১।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে অনলাইনে কাজ করার প্রবণতা তৈরি হওয়ায় সারা বিশ্বে যখন স্মার্টফোনের চাহিদা তুঙ্গে, ঠিক তখন গত বছরের মার্চে উদ্ভাবনীর সঙ্গে স্যামসাং বাজারে নিয়ে আসে এ৫০ সিরিজের নতুন ফোন গ্যালাক্সি এ৫২। ফোনের দীর্ঘস্থায়িত্বের কথা বিবেচনা করে এই সিরিজের ফোনে প্রথমবারের মতো পানি ও ধুলো থেকে সুরক্ষা দিতে নিশ্চিত করা হয় আইপি৬৭ রেটিং, আর গরিলা গ্লাস ৫। ঝকঝকে ছবি আর ভিডিও ধারণের জন্য এই ফোনে গুরুত্ব দেয়া হয় ক্যামেরার ওপর। ৬৪ মেগাপিক্সেল মেইন ক্যামেরা আর ফোরকে ভিডিও ধারণ সুবিধা এই ফোনকে স্মার্টফোন বাজারে অনন্য করে তোলে। আর এ৫১ থেকে ব্যাটারিলাইফও বাড়ানো হয় এ৫২-তে। এতে রয়েছে ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিংয়ের সাথে ৪,৫০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি।
গ্রাহকদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে তুলতে এবং ৫জি প্রযুক্তির জগতে প্রবেশের সুযোগ করে দিতে স্যামসাং নিয়ে আসে গ্যালাক্সি এ৫২এস ৫জি। এর ৫জি ফিচার ব্যবহারকারীদের সামনে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। স্ন্যাপড্রাগন ৭৭৮জি অক্টা-কোর প্রসেসরযুক্ত গ্যালাক্সি এ৫২এস ৫জি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেয় স্বাচ্ছন্দ্য ও দ্রুতগতির সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা। এর ৬.৫-ইঞ্চির সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে এবং ১২০ হাটর্জ রিফ্রেশ রেট সম্পন্ন স্ক্রিন ব্যবহারকারীদের দেয় মসৃণ স্ক্রল এবং দুর্দান্ত গেমিংয়ের অভিজ্ঞতা।
প্রাযুক্তিক উতকর্ষের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে স্যামসাং উন্মোচন করেছে এ৫০ সিরিজের নতুন ফোন গ্যালাক্সি এ৫৩। স্যামসাংয়ের বিশেষ এআই ক্যামেরার পাশাপাশি ফোনের দ্রুততর পারফরমেন্স নিশ্চিত করতে এতে থাকছে একবারে নতুন এক্সিনোস ১২৮০ প্রসেসর। এ ছাড়াও, এতে থাকছে হাইপারফাস্ট ফাইভজি। ডিভাইসটির ৬.৫ ইঞ্চির এস অ্যামোলেড এফএইচডি প্লাস ডিসপ্লে ও ১৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে ভিডিও কনটেন্ট আরও ভালোভাবে উপভোগ করা যাবে। ৫ ন্যানোমিটার চিপসেট থাকায় দীর্ঘক্ষণ ফোন চালালেও ডিভাইস গরম হবে না, আর দ্রুত ব্যাটারি শেষ হওয়ার ঝামেলাও পোহাতে হবে না।
এআই গেম বুস্টার ও জিপিইউ থাকায় গেম খেলার অভিজ্ঞতা হবে আরও অসাধারণ। ৬৪ মেগাপিক্সেলের মেইন ক্যামেরা, ১২ মেগা পিক্সেলের আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা এবং ৫ মেগা পিক্সেলের ডেপথ ও ম্যাক্রো ক্যামেরার সঙ্গে দিন-রাত যেকোনো সময় আরও স্পষ্ট ও নিখুঁত ছবি তোলা যাবে। এ ছাড়া, ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধার সঙ্গে ৫,০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারিযুক্ত এই ফোনটি মাত্র ৮৪ মিনিটে শূন্য থেকে শতভাগ চার্জ হয়ে যাবে।
নজরকাড়া রঙ আর আকর্ষণীয় ডিজাইনের এই ফোনটি ৪৩,৯৯৯ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ৫০ সিরিজের নতুন এই সংস্করণ নিঃসন্দেহে ব্যবহারকারীদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে নতুন ধাপে উন্নীত করবে।