নিত্যনতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত এবং সম্প্রসারিত করছে বহুজাতিক স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভো। স্মার্টফোনে আকর্ষণীয় নকশা, ক্যামেরায় প্রতিনিয়ত দুর্দান্ত প্রযুক্তির সংযোজনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ক্রেতাদের আস্থা ও ব্যাপক সন্তুষ্টি অর্জন করেছে ভিভো। ২০১১ সালে যাত্রা করা ভিভো বাংলাদেশে স্মার্টফোন নিয়ে আসে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। এই স্বল্প সময়ের মাঝেই বেশ আলোড়ন ফেলেছে ভিভো। ভি এবং ওয়াই সিরিজের স্মার্টফোনগুলো পেয়েছে দারুণ জনপ্রিয়তা।
ভিভো নিজেদের জনশক্তির ৮০ ভাগ নিয়োজিত রেখেছে স্মার্টফোনের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে। ভিভো-ভি২১ সিরিজটি দেশের তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। রাতে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ছবি তোলার দুর্দান্ত গুণটি তারুণ্যের মন কেড়েছে। বাজেট ফোন হিসেবে ওয়াই সিরিজের ফোনগুলো পছন্দ করেছেন গ্রাহকরা। স্বল্প খরচে আধুনিক সব প্রযুক্তি মিলছে এই সিরিজেও।
ভিভো এক্স২০প্লাস ইউডি মডেল বিশ্বের প্রথম ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি সংযোজিত স্মার্টফোন। এ ছাড়া গ্রাহকের পছন্দের কথা বিবেচনায় নিয়ে চলতি বছরেও বিভিন্ন সময়ে বেশকিছু ফিচার সংযুক্ত করেছে ভিভো তাদের বিভিন্ন স্মার্টফোনে। যার মধ্যে অন্যতম গিম্বল প্রযুক্তি, আই অটো-ফোকাস, অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন, সেলফি স্পটলাইট এবং আরও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ভার্চুয়াল র্যাম। শীর্ষ লেন্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কার্ল জেইসের সঙ্গে মিলে ভিভো এক্স৬০প্রো মডেলের স্মার্টফোনে গিম্বল স্ট্যাবিলাইজেশন ২.০ প্রযুক্তি সংযুক্ত করেছে। গিম্বল হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যেখানে বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরাযুক্ত করা যায় এবং ভিডিও ধারণ করার সময় এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থির থাকে।
২০১৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চীনের বাইরে স্মার্টফোন নিয়ে আসে ভিভো। এরপর ক্রমান্বয়ে বাজার বেড়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশও অঞ্চলে নিজেদের প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ভিভো। ৪০ কোটির বেশি গ্রাহক ব্যবহার করছেন ভিভো’র স্মার্টফোন। গেল বছরের প্রথম দিকে ইউরোপের বাজারে স্মার্টফোন নিয়ে যায় ভিভো। এই মুহূর্তে বছরে ২০ কোটি স্মার্টফোন বানানোর সক্ষমতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
বাজার গবেষণার বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা কর্পোরেশনের (আইডিসি) ত্রৈমাসিক স্মার্টফোন বিক্রয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে চীনের স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষে রয়েছে ভিভো। বাজারের ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ ভিভো’র দখলে। বর্তমানে চীনের বাজারে প্রতি চারটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মাঝে একটি ভিভো’র। ভারতে স্মার্টফোনের বাজারে তৃতীয় (১৮ শতাংশ) অবস্থানে এই স্মার্টফোন প্রতিষ্ঠান। গত ২৮ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাজার বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইডিসি বলছে, চীনের বাজারে ভিভো’র এক বছরের প্রবৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বৈশ্বিক মহামারিতেও ভালো করেছে ভিভো। সুলভ থেকে ফ্ল্যাগশিপ, সব ধরনের মূল্য কাঠামোর স্মার্টফোন বাজারে এনে গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এপ্রিল থেকে জুন প্রান্তিকের ডেটা বিশ্লেষণ করে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্স জানিয়েছে, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ফাইভ-জি প্রযুক্তির স্মার্টফোন বাজারজাতে শীর্ষ অবস্থান রয়েছে ভিভো। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ৬জি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করেছে, যা ২০৩০ সাল নাগাদ ক্রেতাদের জন্য জন্য হাজির করা হতে পারে।
ভিভো কর্তৃপক্ষ বলছে, তাঁরা বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের মনন, রুচি ও সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে স্মার্টফোন তৈরি করে এবং বাজারজাত করে। ফলে ক্রেতারা এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের স্মার্টফোনের প্রতি আগ্রহী হন এবং ব্যবহার করে সন্তুষ্ট থাকেন।