মিডরেঞ্জের স্মার্টফোন বাজারে অপো এফ সিরিজ বেশ জনপ্রিয় একটি স্মার্টফোন সিরিজ। উদ্ভাবনী ডিজাইন, সময়োপযোগী ফিচার এবং সাশ্রয়ী দামের মাধ্যমে গ্রাহকদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে ‘এফ’ সিরিজের স্মার্টফোনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় অপো সম্প্রতি দেশের বাজারে এনেছে এফ সিরিজের নতুন স্মার্টফোন ‘এফ১৫’।
বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্মের স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে অপোর নতুন এই স্মার্টফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বোচ্চ বডি টু ডিসপ্লে। ফলে স্মার্টফোনের আকার না বাড়িয়েই বড় ডিসপ্লে ফোনে সংযুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এর বাইরে পাতলা স্মার্টফোন তৈরিতেও বেশ অগ্রগণ্য অবস্থানে আছে অপো। অপো এফ সিরিজের নতুন সংযোজন এফ১৫ স্মার্টফোনও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। অপো এফ১৫ হতে যাচ্ছে ‘রিয়েল লাইফ’ ডিভাইস যা স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাই পাল্টে দেবে।
স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে হালকা, স্লিম এবং একহাতে ব্যবহারের উপযোগী ডিভাইস সবার পছন্দের শীর্ষে থাকে। তবে প্রয়োজনীয় ফিচার না থাকার আশংকায় অনেক ক্ষেত্রেই স্লিম এবং হ্যান্ডি স্মার্টফোন কেনা সম্ভব হয় না। তবে অপো এ দুটি বিষয়কেই সমন্বয় করেছে এফ১৫ স্মার্টফোনে। প্রয়োজনীয় সব ফিচার তো থাকছেই, সেইসাথে স্লিম এবং একহাতে ব্যবহার উপযোগী অপো এফ১৫।
স্মার্টফোনটিতে থাকছে ৬.৪ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে যার রেজ্যুলেশন ১০৮০ পিক্সেল বাই ২৪০০ পিক্সেল। ডিসপ্লের সুরক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫।
প্রতিদিনের দরকারি সব কাজ সেরে নেওয়ার জন্য তরম্নণরা এখন অনেকটাই স্মার্টফোন নির্ভর। ছবি তোলা থেকে শুরু করে গেমিং, ডিজাইন থেকে শূলু করে পারফরমেন্স, স্মার্টফোন কেনার আগে এসব বিষয়ই থাকে তাদের বিবেচনায়। আর এ বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে অপোর এ ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৮ গিগাবাইট র্যাম এবং মিডিয়াটেক হেলিও পি৭০ চিপসেট। ফলে স্মুথ পারফরমেন্সের পাশাপাশি মাল্টিটাস্কিংয়েও মিলবে অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ফোনটিতে থাকা ১২ ন্যানোমিটার আর্কিটেকচারের হেলিও পি৭০ প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি গেমিংয়েও দেবে অসাধারণ অভিজ্ঞতা। অন্যান্য প্রসেসরের তুলনায় এর এআই প্রসেসিং ক্ষমতা ১০-৩০% বেশি এবং এটি আগের সংস্করণ পি৬০-এর তুলনায় ৩৫% কম চার্জ খরচ করে।
বর্তমান সময়ে মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ছে। হাইলি-ইনটেন্সিভ গেম খেলা, ছবি কিংবা ভিডিও সম্পাদনার জন্য অনেকেই স্মার্টফোনকে বেছে নিচ্ছেন। তবে র্যাম কম থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই একাধিক অ্যাপ চালু রাখা সম্ভব হয় না। এ সমস্যা সমাধানে অপো এফ১৫ স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়েছে ৮ গিগাবাইট র্যাম। ফলে মাল্টিটাস্কিং ছাড়াও স্মুথ এবং ল্যাগ ছাড়াই যেমন গেম খেলা যাবে, তেমনি ছবি আর ভিডিও সম্পাদনায়ও নতুন মাত্রা যোগ করবে অপো এফ১৫। এর পাশাপাশি স্মার্টফোনটিতে থাকছে ১২৮ গিগাবাইট স্টোরেজ স্পেস।
অপো এফ১৫ স্মার্টফোনে আরও থাকছে গেম বুস্ট ২.০। এর ফলে পাবজি, কল অব ডিউটি কিংবা অ্যাসফল্ট ৯-এর মতো হাই গ্রাফিক্সের গেমগুলোর ক্ষেত্রে আরও উন্নত পারফরমেন্স পাওয়া যাবে। এছাড়া এর ডিসপেস্নর রিফ্রেশ রেটও বেশি। সবকিছু মিলিয়ে চিপসেটটি আরও দ্রম্নত ফাইল রেন্ডার করতে সক্ষম। আর সবকিছু মিলিয়ে ফোনটিতে যেকোনো কাজ করে নেওয়া যায় মুহ–র্তেই।
অপো এফ১৫-এ ব্যবহার করা হয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যাতে থাকছে এজ লাইটিং প্রযুক্তি। এর ফলে বাজারে থাকা অন্যান্য ফোনের তুলনায় ৩০% দ্রম্নতগতিতে ফোনটি আনলক হবে, এর জন্য সময় লাগবে মাত্র ০.৩২ সেকেন্ড। সেনসিটিভিটি ডিটেইল বাড়াতে সেন্সরটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ফিল্টার যার মাধ্যমে ফেক ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
স্মার্টফোনটিতে থাকছে কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ। এর মেইন ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেল সেন্সর যার অ্যাপার্চার এফ/১.৮। রেগুলার মোডের পাশাপাশি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল মোডে ঝকঝকে ছবি তোলার জন্য এতে পিক্সেল কমবিনেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে প্রতি চারটি পিক্সেলের সমন্বয়ে একটি পিক্সেল তৈরি করা হবে। ২৬ মিলিমিটার লেন্স থাকায় ওয়াইড অ্যাঙ্গেলেও চোখ ধাঁধানো ছবি তোলা সম্ভব হবে।
যারা ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন, তাদের জন্য ফোনটির ক্যামেরায় থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল সেন্সর যা দিয়ে ১১৯ ডিগ্রী পর্যন্ত ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলা যাবে। এর সাথে থাকা ২ মেগাপিক্সেল মনোলেন্স আরও ডিটেইল ছবি উপহার দিবে। পোর্ট্রেট ছবি তোলার জন্য এতে থাকছে ২ মেগাপিক্সেলের আরও একটি সেন্সর।
শুধু রিয়ার ক্যামেরাই নয়, ফোনটির ফ্রন্ট ক্যামেরাতে বিশেষ জোর দিয়েছে অপো। এতে থাকা ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরায় ২৬ মিলিমিটার ওয়াইডলেন্স থাকায় একসাথে অনেকে মিলে সেলফি তোলা যাবে। এর পাশাপাশি সেলফি ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে এইচডিআর। আকর্ষণীয় সেলফির জন্য আছে এআই বিউটিফিকেশন মোড এবং জেন্ডার ডিটেকশন প্রযুক্তি।
অপো এফ১৫ স্মার্টফোনের ক্যামেরায় থাকা হাই-রেজ্যুলেশন ডেপথ ইঞ্জিন ছবির ডেপথ-ম্যাপিং বৃদ্ধি করবে তিনগুন পর্যন্ত্ম। ইলেকট্রনিক ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন প্রযুক্তি থাকায় স্ট্যাবল ভিডিও ধারণ করার কাজটিও আরও সহজ হয়ে যাবে।