ক.বি.ডেস্ক: ‘ভিশন-২০৪১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উদ্ভাবন পরিকল্পনা, বিদ্যমান সুযোগকে কাজে লাগানো, উন্নত প্রযুক্তির দক্ষ ব্যবহার, ডেটা-ভিত্তিক পরিকল্পনা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এটুআই আয়োজিত ‘‘ইমাজিনিং বাংলাদেশ ইন ২০৪১’’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞগণ এই সুপারিশ তুলে ধরেন।
প্যানেল আলোচক ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) কালেক্টিভ ইন্টিলিজেন্স, পাবলিক পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল ইনোভেশনর অধ্যাপক স্যার জিওফ মলগান; যুক্তরাষ্ট্রের পিপল সেন্টারড ইন্টারনেটর প্রধান মেই লিন ফাং; হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর অল (এইচএইএফএ) সভাপতি অধ্যাপক ড. রুহুল আবিদ এবং কনফিগভিআর ও কনফিগআরবটর প্রতিষ্ঠাতা রুদমিলা নওশিন। প্যানেল আলোচনা মডারেট করেন এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।
আলোচনায় জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, আমাদের সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর এখন আমরা উদ্ভাবনী বাংলাদেশ এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এখন বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির স্মার্ট ও উদ্ভাবনী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
অধ্যাপক স্যার জিওফ মুলগান বলেন, বর্তমানে বিদ্যমান অনেক চাকরির সুযোগ অদূর ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষ করে শ্রম-নির্ভর যেসব চাকরি রয়েছে। ভবিষ্যত-ভিত্তিক কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য এবং প্রস্তুতি নেয়ার জন্য ডেটা ব্যবহার এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সক্ষমতা তৈরি করতে পেরেছে। তারা দেশের জনগণের বুদ্ধিভিত্তিক সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে পেরেছে।
মেই লিন ফাং বলেন, ডিজিটাল বিভাজন নির্মূলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো তাদের ফিডব্যাকগুলো সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। আমরা যে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছি তার জন্য আমাদের মধ্যে অংশীদারিত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। আর ডিজিটাল বিভাজন নির্মূলে এটাই সেরা মাধ্যম হবে। এসব ফিডব্যাকগুলো সমাধান করতে পারলে সেটাই বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হয়ে উঠবে। যাতে দেশের সব মানুষ ডিজিটাল উন্নয়নের সাথে যুক্ত হতে পারে।
অধ্যাপক ড. রুহুল আবিদ বলেন, নতুন নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাও বাড়বে। সরকারকে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে বেসরকারি সংস্থাগুলো নুতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রতিযোগিতায় নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে পারে। ডেটা সম্পর্কিত তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকার নেতৃত্ব দিতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা সবার কাছে সাশ্রয়ী হতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা সকলের কাছে সহজলভ্য না হলে কেউ এ সেবা নিতে পারবে না। আর এটাকে সফল করার জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
রুদমিলা নওশিন বলেন, অনেকদিন ধরেই প্রায় সব ধরনের কারখানায় মানুষকে সাহায্য করছে রোবট। রোবট উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন এবং ঝুঁকির হার কম। এআর-ভিআর ও রোবোটিক্স সম্মিলিতভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে এবং এটি আরও ভালো সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের ব্রেনকে আরও কাজে লাগাতে হবে এবং এইসবক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ভবিষ্যত হয়তো শারীরিক শ্রমের চাকরি নাও থাকতে পারে, তবে এই চাকরিগুলো আরও ভাল কিছু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে। ২০৪১ সালে শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে।