বিনা মূল্যে ও সহজে যোগাযোগের জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মেসেজিং অ্যাপ রাকুতেন ভাইবার তাদের বৈশ্বিক জরিপের ফল প্রকাশ করেছে। এ জরিপে আনুমানিক ১ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ অংশ নেয়। বিশ্বের ২৪টি দেশে পরিচালিত এ জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, যোগাযোগের সুবিধার্থে তারা গুরুত্বপূর্ণ ই-লার্নিং পণ্যগুলোর পাশাপাশি এ প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেছেন। জরিপে অংশ নেয়া ৭০ শতাংশেরও বেশি ব্যবহারকারী–যার মধ্যে ৭৭ শতাংশ বাংলাদেশি ব্যবহারকারী রয়েছেন–জানিয়েছেন ভবিষ্যতে স্কুলের দিনগুলোতে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সংযুক্ত থাকতে ভাইবার ব্যবহার করবেন।
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কয়েক মাস পেরিয়ে গেছে এবং এখনো বিশ্বব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাবর্ষের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভেবে দেখছে। বিশ্বের অনেক দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা সরাসরি স্কুলে উপস্থিত হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি হাইব্রিড মডেল অনুসরণ করা হবে কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া দূরবর্তী স্থান পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করবে।
ভাইবারের জরিপ অনুযায়ী, বৈশ্বিক উত্তরদাতাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মনে করেন নতুন শিক্ষাবছরে শিক্ষা কার্যক্রম দূরবর্তী পদ্ধতিতে পরিচালিত হওয়া উচিত। অন্যদিকে, বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ ব্যবহারকারী অনলাইন ও সরাসরি শ্রেণিক্ষে উপস্থিতি- এ দু’য়ের সমন্বয়ে একটি হাইব্রিড মডেল চায়। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য সকল মডেলের ক্ষেত্রেই নতুন পদ্ধতির প্রয়োজন হবে, যা যথাসম্ভব স্বাভাবিকতা বজায় রেখে পরিচালিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা যেনো তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করতে পারে সেটিও নিশ্চিত করবে। ভাইবার শ্রেণিকক্ষে বা বাসায়, অনলাইন কিংবা অফলাইনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমভাবে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করছে।
জরিপে অংশ নেয়া বাংলাদেশি উত্তরদাতাদের মধ্যে গড়ে ৬৯ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা শিক্ষামূলক কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে প্রধান টুল হিসেবে মোবাইল/ ট্যাবলেটে ভাইবার ব্যবহার করেন। অন্যদিকে, ফিলিপাইন, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কায় এ হার কিছুটা কম; যথাক্রমে: প্রায় ৩৬ শতাংশ, ২৯ শতাংশ এবং ৪৯ শতাংশ। অধিকাংশ উত্তরদাতা বলেন, সামনের স্কুলের দিনগুলোতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তারা ভাইবার ব্যবহার করবেন। ভাইবারের বহুমুখী ব্যবহার এটিকে অনলাইন ও অফলাইনে সমানভাবে শিক্ষামূলক কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য সহায়ক টুল হিসেবে বেশ কার্যকরী করে তুলেছে।
এ নিয়ে রাকুতেন ভাইবারের প্রধান নির্বাহী জামেল আগাওয়া বলেন, বছর খানেক আগে মনে করা হতো ভবিষ্যতের শিক্ষা কার্যক্রম আগামী দশ বছর কিংবা তারও অধিক সময়ের মধ্যে শতভাগ দূরবর্তী স্থান থেকে পরিচালিত হবে। কিন্তু, বৈশ্বিক মহামারির প্রকোপে রাতারাতিই শিক্ষার্থীরা দূরবর্তী স্থান থেকে শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে। একজন অভিভাবক হিসেবে আমি সবসময় আমার বাচ্চাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভাইবার ব্যবহার করেছি। গত কয়েক মাস ধরে, আমরা দেখেছি অনেক অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অনলাইন কিংবা সরাসরি শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভাইবার ব্যবহার করেছে।
ভাইবারের সেবাদানের পরিসীমার মধ্যে রয়েছে: ভিডিও চ্যাট থেকে গ্রুপ চ্যাট ও জরিপ। এ সেবাগুলোর প্রত্যেকটিই উচ্চ মানসম্পন্ন এনক্রিপশন দ্বারা সুরক্ষিত। সামনের দিনগুলোতে নতুন ফিচার নিয়ে আসছে ভাইবার। এর মধ্যে রয়েছে: জরিপের জন্য কুইজ মোড (চালু হওয়ার প্রক্রিয়াধীন), রিমাইন্ডার্স ইন মাই নোটস ও মিডিয়া গ্যালারী এনহ্যান্সমেন্ট। গত শিক্ষাবর্ষ শেষে, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ধরণের শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভাইবার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষের শেষে ও এ বছরের শুরুতে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের আটটি দেশে ভাইবারের করা অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী, ৬৫ শতাংশ শিক্ষক জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষের মধ্যে যোগাযোগের সুবিধায় তারা ভাইবার ব্যবহার করেছেন।