ক.বি.ডেস্ক: দেশের প্রথম অনলাইনভিত্তিক জব মার্কেটপ্লেস দ্য টু আওয়ার জব এবং উল্কা গেমস যৌথভাবে দুদিনব্যাপী (৭-৮ ডিসেম্বর) আয়োজন করে ‘‘ডিজিটাল ক্যারিয়ার কনক্লেভ ২০২১’’। অনুষ্ঠানটি ওয়েবিনারের একটি সিরিজের ভার্চুয়ালী অনুষ্ঠিত হয়। দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পাশাপাশি একই বছর ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের সফল বাস্তবায়ন উপলক্ষে ডিজিটাল ক্যারিয়ারের উত্থান, করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত বর্তমান বিশ্বের প্রাসঙ্গিকতা এবং প্রতিভাবান তরুণেরা কীভাবে পর্যন্ত নব্য ডিজিটাল কর্মক্ষেত্রে সংযুক্ত হতে পারে, এর চ্যালেঞ্জসমূহ কি ও তা মোকাবেলা করার জন্য দিক নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। এ সময় সংযুক্ত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, আইসিটি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, এলআইসিটির পলিসি এডভাইজার সামি আহমেদ, আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রাকিব, বিওএলডির প্রেসিডেন্ট কাজি এম আহমেদ, ঢাবির আইবিএ পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ মোমেন, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, বাংলাদেশ আইপি ফোরামের প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার এ বি এম হামিদুল মিসবাহ, টেকনোম্যাজিকের সিইও আরিফ মোহাম্মদ, উল্কা গেমসের সিইও জামিলুর রশিদ, দ্য টু আওয়ার জবের প্রতিষ্ঠাতা সানজিদা খন্দকার।অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন নগদের চিফ পাবলিক এ্যাফেয়ারস অফিসার সোলাইমান সুখন।
প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে `ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপায়নের এক অনন্য উচ্চতায় প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল ২০০৮ সালে, সেই স্বপ্ন এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি শিক্ষার জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ৩৫ হাজার আধুনিক শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে প্রায় ৫০টি গেমস টেস্টিং ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রচুর তরুণ ডিজিটাল এনিমেশনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, বিজ্ঞান ও অন্যান্য নানা বিষয়ক মোবাইল অ্যাপ এবং গেমস তৈরি করছে৷ বিগত ১২ বছরে দেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি ব্যাকবোন তৈরি হয়েছে, যা গ্রাম এলাকা পর্যন্ত আইসিটির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। গ্রামে বসেই ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন দেশের তরুণরা। বাড়ছে ডিজিটাল লেনদেন। ই-নথিতে এসেছে বাংলাদেশ। বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে অনলাইনেই। অ্যাপ-নির্ভর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।
সামি আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাঙালী তরুণেরা প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে, এসব নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও, আমি গেমিং সেক্টরে ফোকাস করতে চাই। এই সেক্টরে আমাদের আয় ও অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মিলিয়ন ডলারের এই বাজারে যুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের এই খাতে দক্ষ কর্মী নির্মান এবং কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।
ব্যারিস্টার এ বি এম হামিদুল মিসবাহ বলেন, ডিজিটাল ক্যারিয়ারের ধারণা চাকরির বাজারের নিরন্তর পরিবর্তনশীল ল্যান্ডস্কেপে মূল্য যোগ করছে। আমাদেরকে সঠিক অবস্থানে সঠিক ধারণা রাখতে হবে, উদ্ভাবনী উপায়ে ও গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে।
সানজিদা খন্দকার বলেন, ‘দ্য টু আওয়ার জব’ বিশ্বাস করে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দক্ষ নারীর জন্য ঘরে বসেই চাকরির সুযোগ তৈরি করে দিবে। সেইসঙ্গে সাশ্রয়ী পারিশ্রমিকে পেশাদার কর্মী পেতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকেও সাহায্য করবে। একজন নারী তাঁর সময়, সুযোগ-সুবিধামতো সংসারের পাশাপাশি চাকরি করবে, ক্যারিয়ার গড়বে, নিজ যোগ্যতায় আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। সংসার জীবনে অন্যের ওপর নির্ভর না করে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করবে।
জামিলুর রশিদ বলেন, ২০১৯ সালে ভারতের মোবাইল গেমস নির্মাতা কোম্পানি মুনফ্রগ ল্যাবস বাংলাদেশের উল্কা গেমসে বিনিয়োগ করে। ইতোমধ্যে মুনফ্রগ ল্যাবস ও উল্কা গেমসের লুডো ক্লাব, তিন পাত্তি গোল্ড, আড্ডা, ক্যারম ইত্যাদি আমাদের তৈরি মোবাইল গেমস বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে ১৮ কোটিরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে। এখন অনলাইন ও অফলাইন ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে আয় হচ্ছে। আমরা সরকারকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ মোট ৪.৯৮ কোটি টাকা দিয়েছি। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ১১ কোটি ছোঁয়ার আশা করি। সঠিক পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও অনেক গেমিং স্টুডিও এ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও সরকারের রাজস্ব আয়ে অবদান রাখবে।