টিভি২৪ ডেস্ক রিপোর্ট : বিভিন্ন দেশের টেকনো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের মুখে ব্র্যান্ডটির নির্মাতা কোম্পানি ট্র্যানশান হোল্ডিংস।
মোবাইল সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান সিকিউর-ডি এবং বাজফিড নিউজের অনুসন্ধানে টেকনো ব্যবহারকারীদের কাছ অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে এমন কিছু প্রমাণও প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ট্র্যানশান হোল্ডিংসের কারখানা রয়েছে। যেখানে দেশেই সংযোজিত হচ্ছে টেকনো এবং আইটেল ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট। দেশের বাজারে স্মার্টফোন সরবরাহের দিক হতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ট্র্যানশান। তারা ৯ লাখ ৪০ হাজার টেকনো স্মার্টফোন সরবরাহ করেছে। স্মার্টফোন ক্যাটাগরির বাজার শেয়ারে এটি ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৯ সালের শেষে তাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ফলে এমন অভিযোগ বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্যও দুশ্চিন্তার ও আশংকার।
সিকিউর -ডি বলছে, ২০১৯ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা ৮ লাখ ৪৪ হাজার এমন অবৈধ লেনদেন আটকিয়ে দেয়। যার জন্য ট্রানশানের প্রি-ইনস্টল করা ম্যালওয়্যারগুলো জড়িত ছিল। সিকিউর-ডি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেফ্রি ক্লিভেস বাজফিড নিউজকে বলেছেন, ওই ব্যবহারকারী শুধু সাবক্রিপশনের বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। এরপরই তা সাবক্রিপশন হয়ে গেছে।
টেকনো এমন ম্যালওয়্যার দিয়ে দরিদ্র দেশগুলোর ব্যবহারকারীদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে ট্র্যানশানের এক মুখপাত্র বাজফিড নিউজকে বলেছেন, তারাও দুটি ম্যালওয়্যারের অস্তিত্ব টেকনো ডাব্লিউ২ হ্যান্ডসেটে পেয়েছে। তবে ট্র্যানশান এমন ম্যালওয়্যার ইনস্টল করেনি দাবি করে তিনি জিনিয়েছেন, এটা তৃতীয় পক্ষের কারো কাজ হতে পারে।
ওই মুখপাত্র দাবি করেন, তারা সবসময় গ্রাহকদের ডেটা সুরক্ষার জন্য কাজ করেন। তাই এমন কাজ তারা করতেই পারেন না। তাদের প্রত্যেকটি ডিভাইসে যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তার নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে প্রাধান্য পায় বলেও জানান তিনি।
তবে ঠিক কত পরিমাণ ডিভাইসে এমন ম্যালওয়্যার দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে তার কোনো হিসাব দেয়নি চীনা প্রতিষ্ঠান ট্র্যানশান। সিকিউর-ডি জানিয়েছে, টেকনোর এমন কাজ শুধু দক্ষিণ আফ্রিকায় নয়। এমন ঘটনার প্রমাণ মিলেছে ইথিওপিয়া, ক্যামেরুন, মিশর, ঘানা, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়াতেও।
ট্র্যানশান শুধু আফ্রিকার ৪ শতাংশ ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট থেকে এমন অর্থ সরিয়েছে এবং ১৮ শতাংশের বেশি ক্লিক করা ব্যবহারকারীরা এর হুমকিতে রয়েছে উল্লেখ করে সিকিউর-ডি।
ট্রানশান বাংলাদেশ জানিয়েছে, অনুসন্ধানের পর এটা জানা গেছে ট্রিডা পুরাতন ও বিশ্বব্যাপী সমাধানকৃত একটা সিকিউরিটি ইস্যু। যা ২০১৮ সালের ২০ মার্চ গ্রাহকদের জন্য ডাব্লিউ২ সিকিউরিটি আপডেটের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। টেকনো ট্রিডা ইস্যুটি তারও আগে ১ মার্চ ২০১৮ সালে সনাক্ত করে। এটি এমন একটি ইস্যু ছিল যা শুধুমাত্র টেকনোর ডাব্লিউ২-এর নির্দিষ্ট কিছু ডিভাইসে দেখা গেছে। আমরা প্রথম যখন বিষয়টি জানতে পেরেছি তখন সিকিউরিটি টিমের সঙ্গে মিলিয়ে এর সমাধান করেছি এবং গ্রাহকদের জন্য ২০ মার্চ ২০১৮ সালের ওটিএ ফিক্স সিকিউরিটি আপডেট দিয়েছি।
যদি এখনো কোনো ডাব্লিউ২ হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারীরা সমস্যাটির সম্মুখীন হয়ে থাকে তাহলে তাদের খুব দ্রুত ওটিএ ফিক্স সিকিউরিটি আপডেট ইনস্টল করার অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিংবা তারা চাইলে টেকনোর বিক্রয়োত্তর সেবাকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে পারেন।
প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা সবসময় ব্যবহারকারীদের ডেটার সুরক্ষা এবং ডিভাইসের নিরাপত্তা দিতে সক্রিয়। তাই তারা যেসব সফটওয়্যার ইনস্টল করে সেগুলো কয়েকটি সিকিউরিটি ধাপ অতিক্রম করেই করা হয়। এমনকি গ্রাহকদের ম্যালওয়্যার যেন ক্ষতি করতে না পারে সে কারণে তারা নতুন হ্যান্ডসেটে তিন মাস পর্যন্ত সিকিউরিটি আপডেট দেয়।
যে এক্সহেলপার যা ট্রিডার মতোই একটা গ্লোবাল ইস্যু হিসেবে ২০১৯ সালে প্রথম দেখা গেছে। এরপরই তারা প্রফেশনার সিকিউরিটি টুলস জিএমএস বিটিএস এবং ভাইরাস টোটাল যা এক্সহলেপার সনাক্ত করতে রিলিজ করেছে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত টেকনো মোবাইলে এক্সহেলপার শনাক্ত হওয়ার কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
-ইন্টারনেট ও টেকশহর অবলম্বনে