ক.বি.ডেস্ক: দেশের মোবাইল অপারেটরদের কলড্রপ, ইন্টারনেটের ধীরগতিসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মোবাইল গ্রাহকদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিষয়গুলো নিয়ে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) অসংখ্য অভিযোগও জমা পড়েছে। গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি নিরসনে মোবাইল ইন্টারনেটের ধীরগতি, প্যাকেজ, কলরেট ও কলড্রপ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করতে কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক, মোবাইল ইন্টারনেট সংক্রান্ত সমস্যা এবং গ্রাহকদের অভিযোগ দ্রুত সমাধানে বিটিআরসি’র ‘অভিযোগ সেলে’র কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছে আদালত। পাঁচ সদস্যের এ কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপ্রতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট ব্রেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম এ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আদালত আদেশে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং আইসিটি বিভাগের সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব’র একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে এ কমিটি করা হয়েছে।
এ আদেশের পাশাপাশি স্বচ্ছ ভয়েস কল, দ্রুতগতির ইন্টারনেট এবং স্থিতিশীল মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং গ্রাহকের কেনা মোবাইল ইন্টারনেট ডাটার পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতে প্যাকেজে মেয়াদ বাতিল করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, রবির প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী এরিক আস টাইগার্স ডেন ও টেলিটকের প্রধান নির্বাহী মো. শাহাব উদ্দিনসহ সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত গত বছরের ২২ নভেম্বর শক্তিশালী নেটওয়ার্কসহ মানসস্মত সেবা নিশ্চিত করতে মোবাইল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই নির্দেশে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেয়া হয়।
এর আগে গত বছরের ১২ জুন মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে অপারেটরগুলোর কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ‘ল রিপোর্টার্স ফোরামে’র সদস্য সাংবাদিক মেহেদী হাসান ডালিম, মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রাশিদুল হাসান।
উল্লেখ্য, ইন্টারনেটের গতি নির্ণয়ের প্ল্যাটফর্ম ওকলার হিসেবে গত বছর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ১২৮তম দেশ। ওকলার তথ্যমতে গত বছরে ডিসেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান লিবিয়া, উগান্ডারও নিচে ছিলো।