ক.বি.ডেস্ক: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধি ও উতসাহিত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এটুআই প্রোগ্রামের তৈরিকৃত জাতীয় পর্যায়ে মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে তৈরিকৃত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘মাস্ক বিতরণী হাব’ এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
অনলাইনে ‘মাস্ক বিতরণী হাব’ এর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শেখ রফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মুজিবুল হক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার উতসাহিত করার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাস্ক বিতরণসহ বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে অনলাইন ড্যাশবোর্ড ‘মাস্ক বিতরণী হাব’ তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সারাদেশে মাস্ক বিতরণের সংখ্যা, মাস্ক বিতরণকারী সংস্থাসমূহের তথ্য, মাস্কের ধরন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাস্ক ব্যবহারকারী জেলা ইত্যাদি তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, ডাটা অ্যানালিটিক্স থেকে শুরু করে ই-ফাইল, সুরক্ষা ডট বিডি এমনকি আজকের ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘মাস্ক বিতরণী হাব’ আমাদের হোম-গ্রোন সলিউশনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এজন্য আমাদেরকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কোনো অর্থ দিতে হয়নি বা পরামর্শকের সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। আমাদের নিজস্ব শ্রম ও মেধা দিয়েই বৈশ্বিক এ সংকটকে মোকাবেলার চেষ্টা করছি। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আমরা শহর, উপশহর, গ্রাম ও দুর্গম এলাকার প্রত্যেক জায়গাতে প্রয়োজন অনুপাতে মাস্ক সরবরাহ করতে পারব। ডাটা বিশ্লেষণ করে যেখানে সংক্রমণের হার বেড়ে যাচ্ছে সেখানে আগাম মাস্ক সরবরাহ করতে পারবো।
ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, মাস্ক বিতরণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমননি সব যায়গায় সমানভাবে মাস্ক পৌঁছানোও জরুরি। আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে বাস্তবে স্বাস্থ্য খাত অনেকখানি শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের সফলতার সবচেয়ে বড় জায়গা হচ্ছে সুরক্ষা। শুধু সুরক্ষা অ্যাপই নয়, করোনা ট্রেসার বিডিসহ আমাদের যত ধরনের ডাটা অ্যানালাইসিসের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে সেক্ষেত্রে আমরা আইসিটি ডিভিশনের অনেক সহায়তা পেয়েছি।
এটুআইর পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী বলেন, মাস্ক ব্যবহার বৃদ্ধি করতে প্রধান দুটি পদক্ষেপের একটি হলো কমিউনিটির সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে মানুষের আচরণগত পরিবর্তন ও আরেকটি হলো মাস্ক বিতরণ। মানুষের কাছে যদি মাস্ক না থাকে তবে তারা মাস্ক কিনবেন না বা পরবেন না। মাস্ক ব্যবহারকে উতসাহিত করার জন্য মাস্ক বিতরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও কারা মাস্ক বিতরণ করছে, কোথায় বেশি দেওয়া হচ্ছে, কোথায় কম দেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে আমরা পুরো চিত্র জানতে পারছি না। মাস্ক বিতরণী হাব-এর মাধ্যমে আমরা এখন বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে খুব দ্রুত সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, যারা মাস্ক বিতরণ করবেন তাদের নাম ও তালিকা ‘মাস্ক বিতরণী হাব’ এ সংরক্ষিত থাকবে। যার ফলে বেসরকারি পর্যায়ে অনেকেই মাস্ক বিতরণে আগ্রহী হবেন এবং এ তথ্যগুলো আমাদের অনেক কাজে লাগবে। আমরা এখন রিয়েলটাইম ডাটা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
এ অনলাইন সভার সঞ্চালনা করেন এটুআইর প্রকল্প পরিচালক মো. ড. আব্দুল মান্নান। সভায় ‘মাস্ক বিতরণী হাব’ কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে একটি অনলাইন প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন এটুআইর চিফ টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ আরফি এলাহী। সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবি, বিভিন্ন এনজিও, আইএনজিও, গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধিগণ অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।