নিউইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অফ রোচেস্টার মেডিকেল সেন্টারের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি ‘সুপারমাউস’ তৈরি করেছেন। একটি সাধারণ ইঁদুরের মস্তিষ্কের কোষগুলো মানুষের মস্তিষ্কের কোষ দ্বারা প্রতিস্থাপন করে এই সুপারমাউস তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু গবেষকরা কোন কারণে এ ধরণের কাজ করতে গেলেন সেটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে গবেষকেরা মানুষের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অসুখ সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানার জন্যই জীবিত ইঁদুরের মস্তিষ্কে মানুষের নিউরন (মস্তিষ্কের কোষের একক) প্রতিস্থাপন করেছেন।
এই হাইব্রিড ব্রেইন ইঁদুরের নিজস্ব নিউরন ধরে রাখে যেটা তার মস্তিষ্কের কোষগুলোর প্রায় অর্ধেক। বাকি তাদের যে গ্লিয়াল কোষগুলো আছে সেগুলো প্রায় সবই মানুষের। গ্লিয়াল কোষ হচ্ছে নন-নিউরনাল কোষ কিন্তু এগুলো মস্তিষ্কে থাকে এবং নিউরন কোষগুলোকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান পত্রিকা নিউ সায়েন্টিস্টকে রোচেস্টারের এক বিজ্ঞানী স্টিভ গোল্ডম্যান জানিয়েছেন, 'যদিও এই ইঁদুরের নন-নিউরনাল কোষগুলো সব মানুষের কিন্তু তারপরও এর মস্তিষ্ক ইঁদুরের মস্তিষ্কই থাকবে, মানুষের মস্তিষ্ক হবে না।'
গবেষকেরা মানুষের অপরিণত গ্লিয়াল কোষগুলো নিয়ে সেগুলো বাচ্চা ইঁদুরের মধ্যে প্রতিস্থাপন করেন। এই কোষগুলো থেকে নতুন গ্লিয়াল কোষ সৃষ্টি হয় যেগুলোর নাম হচ্ছে অ্যাস্ট্রসাইটিস(Astrocytes)।
৩ লাখ মানবকোষ ইঁদুরের মধ্যে দেয়া হয়, ১ বছর পর এ কোষের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ মিলিয়ন। ইঁদুরের নিজস্ব যে গ্লিয়াল কোষগুলো থাকে সেগুলো অ্যাস্ট্রসাইটিস দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। এগুলো ইঁদুরের গ্লিয়াল কোষের চাইতে ২০ গুন বড়।
কিন্তু এতকিছু করে লাভটা কী হল? গবেষকেরা বলছেন সাধারণ ইঁদুরের চাইতে সুপারমাউস অনেক বেশি চালাক। তাদের স্মৃতিশক্তিও অনেক প্রখর।