বিশ্বের ৮টি দেশের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে আন্তঃদেশীয় সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিনিময়ের লক্ষ্যে অনলাইনে আয়োজিত হয় ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ শীর্ষক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এটুআই’র যৌথ উদ্যোগে ৬ মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ৮টি দেশের শিক্ষকগণ তাঁদের স্ব-স্ব দেশের ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজগুলো প্রদর্শন করেন।
চট্রগ্রাম প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের তত্বাবধানে অনুষ্ঠানে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ‘কালামকারি’ উপস্থাপন করেন অদিতি কালকারনি, রাশিয়ান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক সংগীত ‘তুবান’ ও ‘খুরেশ’ উপস্থাপন করেন নাদেজদা ইয়্যুভানোভা, ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্য তুলে ধরেন সাব্বি পারভেজ, তুরস্কের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ‘তুর্কি কফি’ উপস্থাপন করেন দেরিয়া চ্যুইল্যান, দক্ষিণ অফ্রিকান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরেন এলিয়ট মাশিনিনি, পাকির ঐতিহ্য ‘কেলাশা’ সংস্কৃতি সম্পর্কে তুলে ধরেন মুহাম্মদ আসিফ ইকবাল, ভারতের প্রাচীন ধর্মীয় উতসব ‘কুম্ভমেলা’ সম্পর্কে উপস্থাপন করেন সন্ধ্যা মিশ্র, ক্রোয়েশিয়ার ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি তুলে ধরেন সেনজানা কোভাকেভিক, মরক্কোর প্রাচীন রেসিপি ‘কসকোয়াস’ উপস্থাপন করেন আসমাই নাসরি, কানাডার সংস্কৃতিতে ভারতীয় নাচের প্রভাব তুলে ধরেন ইন্দ্রানি চৌধুরী এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্য ‘জামদানির’ কথা তুলে ধরেন মো. মহিউদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন এটুআইর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান। অতিথি হিসেবে আরও যুক্ত ছিলেন ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রোগ্রাম অফিসার কিজি তাহনিন এবং এটুআইর এডুকেশনাল টেকনোলজি এক্সপার্ট মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
ড. মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, শিক্ষকরাই সমাজে পরিবর্তন আনতে পারে। ফলে, এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে পারস্পরিক সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়। এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকগণ তাঁদের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যগুলো তুলে ধরতে পারবেন।
কিজি তাহনিন বলেন, ইনট্যানজিবল কালচার কেবল একটি দেশের সাংস্কৃতিক অবস্থানই তুলে ধরে না, একই সঙ্গে একটি সমাজ বা গোষ্ঠীর নিজস্ব রীতিনীতি বা স্বকীয়তার বিষয়গুলো উপস্থাপিত হয়। কোন গোষ্ঠী সম্পর্কে জানতে বা অধ্যয়ন করতে যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে আলোচকগণ বলেন, একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকমণ্ডলী তাঁদের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ সংস্কৃতির পরিচয়, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ তৈরি এবং অন্য সংস্কৃতির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়েই আয়োজিত হয়েছে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যা আমাদের নিজস্ব ইনট্যানজিবল কালচালার হেরিটেজের সঙ্গে ভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যতা ও বৈসাদৃশ্যতাগুলো বুঝতে সহায়তা করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআই প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের ১০০টি দেশের শিক্ষক, শিক্ষা অফিসার, গবেষক এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে শিক্ষক: সংকটে নেতৃত্ব, নতুন করে ভবিষ্যতের ভাবনা শীর্ষক ৬ মাসব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানের এটি ছিলো প্রথম সাংস্কৃতিক পর্ব। প্রায় ২১টি সেমিনার, ৫টি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ৬টি সাইড ইভেন্টসের সমন্বয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান আগামী ১৭ মার্চ ২০২১ সালে শেষ হবে। এ সময় সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ-এর শিক্ষকমণ্ডলী, এটুআই-এর কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষকবৃন্দ অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন।