আর কিছুদিন পরই ঈদুল আযহা (কুরবানীর ঈদ)। কুরবানীর জন্য তো আমরা সবাই মোটাতাজা গরু-ছাগল কিনছি কিন্তু তোমাদের মনে কী প্রশ্ন জাগে না শুধু ঘাস লতাপাতা খেয়ে কিভাবে বেঁচে থাকে এরা। সবুজ তাজা ঘাস খেয়েই গরু বিশালদেহী হয়ে ওঠে। অথচ মানুষের বেলায় চিকিৎসকেরা কিন্তু বলেন অন্যকথা, খাদ্য তালিকায় প্রয়োজনীয় মাছ-মাংস, ভাত-রুটি, ফলমূল না থাকলে শরীর সুস্থ থাকে না। তাহলে গরু বা তৃণভোজী প্রাণীরা কিভাবে এতো সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকে? মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণী সাধারণত অন্যান্য প্রাণীর মাংস ও শাক-সবজি খেয়ে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে, কিন্তু গরুর তো সেই সুযোগ নেই, তাহলে? এ জন্য গরুর শরীরে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। তাদের বহুমাত্রিক পাকস্থলী এ ব্যাপারে সাহায্য করে। ঘাস, লতাপাতা খাওয়ার পর প্রথমে সেগুলো যায় বড় ও একাধিক স্তরের পাকস্থলীতে। সেখানে বিভিন্ন অণুজীব (মাইক্রো অর্গানিজম) উদ্ভিদের কোষগুলো গাজন প্রক্রিয়ায় ফ্যাটি এসিড তৈরি করে। এখান থেকে গরু তার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির এক বিরাট অংশ সংগ্রহ করে। এরপর গরু সেই খাদ্য আবার মুখে এনে জাবর কাটে এবং মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর পরিপাক-প্রক্রিয়ার মতোই স্বাভাবিক ধারায় তা আসল পাকস্থলীতে পাঠায়, যা ওই ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্য দিয়ে যায়। এখানে অ্যামাইনো এসিড ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরে সংশ্লেষিত হয় এবং আগের পাকস্থলীর অণুজীবগুলোও পরিপাক হয়। এভাবে শুধু ঘাস থেকেই গরু তার শরীরের জন্য পুষ্টিকর উপাদানগুলো সংগ্রহ করে মোটাতাজা হয় এবং বেঁচে থাকে।