টিভি২৪ ডেস্ক: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, দেশে যখন বাংলা ভাষায় কম্পিউটার বিষয়ক একটি খবর লেখার মানুষ খোঁজে পাওয়া যেতোনা তখন তিনি সাধারণ মানষের কাছে এই প্রযুক্তিকে সহজ সরলভাবে তুলে ধরেছেন। কম্পিউটার বিপ্লবের ইতিহাসে সাংবাদিক নাজিমুদ্দিন মোস্তান তার ক্ষুরধার লেখনি কাজে লাগিয়েছেন। কম্পিউটার কি কাজে লাগে, কী কাজ করা যায়, বাংলা লেখনির সংগ্রাম, কম্পিউটার থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের সংগ্রাম এবং কম্পিউটার মেলার আয়োজনের সংগ্রামের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় নাজিমুদ্দিন মোস্তান স্মরণে ডিজিটাল প্লাটফর্ম এ আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তি সাংবাদিকতায় নাজিমুদ্দিন মোস্তানের অবদান স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ছিলেন সাংবাদিক নাজিমুদ্দিন মোস্তান। প্রযুক্তি বিষয়ক রিপোর্ট, তরুণদের সম্ভাবনা নিয়ে রিপোর্টের দিকে তাঁর ঝোঁক ছিল বেশি। তাঁর সময়ের লোকজন যেখানে প্রযুক্তি বিমুখ ছিলো, এমনকি সাংবাদিকরাও পারলে বিষয়টিকে এড়েয়ে যেতেন তখন তিনি ছিলেন সম্পূর্ন ভিন্ন। পরিপূর্ণভাবে প্রযুক্তিবান্ধব।কম্পিউটার প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং সম্ভাবনার খবরাখবর তিনিই প্রথম জাতীয় পত্রিকায় তুলে ধরেন।
তিনি মূলত অর্থনীতি বিষয়ে সাংবাদিকতা করতেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন দেশের উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়াবে তথ্যপ্রযুক্তি। সারা পৃথিবীতেই সেসময় তথ্যপ্রযুক্তির ধারণা নতুন। তিনি নতুন পথেই হাঁটলেন। শুরু করলেন, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে লেখালেখি। ১৯৮৭-৮৮ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ এক ক্রোড়পত্রে প্রথম কম্পিউটার নিয়ে লেখেন। তারপর থেকে নিয়মিতই কম্পিউটার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এর জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে লিখে গেছেন। যেকোন উপলক্ষ্যেই তিনি এবিষয়ে লিখতে ভালোবাসতেন।
এবিষয়ে লেখালেখির রসদ সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে সবসময় বিভিন্ন কোম্পানিতে যেতেন, বিদেশী পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন লেখা, বিভিন্ন পণ্যের ব্রশিওর সংগ্রহ করতেন। কম্পিউটার জগৎ পত্রিকার প্রথম প্রচ্ছদ প্রতিবেদনটিও তিনি যৌথভাবে লিখেছেন। হানিফ উদ্দিন মিয়ার হাত ধরে যেমন এই দেশে কম্পিউটার এসেছে, কম্পিউটার বি্প্লবে আবদুল কাদেরের অবদান যেমন জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে এবং তাদেরকে যেমন সম্মানিত করা হয়ে্ছে তেমনি নাজিমুদ্দিন মোস্তানকে সম্মানিত করা সময়ের দাবি। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মোস্তান ভাই এর কাছে ঋণী। কম্পিউটারে বাংলা প্রচলন করতে গিয়ে যতো বাধার মুখোমুখী হয়েছি তার সবটাতেই তিনি বন্ধুর মতো পাশে দাড়িয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামান গুণিজন সৈয়দ আবদুল হক এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক সানজিদা খাতুন বক্তৃতা করেন। বক্তারা নাজিমুদ্দিন মোস্তানের বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবন বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি সাংবাদিকতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।