আল-আমীন দেওয়ান : সিম বা সংযোগ নিলে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো হতে কিস্তিতে স্মার্টফোন কিনতে পারবেন গ্রাহকরা।
অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে সিম বা নেটওয়ার্ক লকিং রেখে নিজ গ্রাহকের কাছে হ্যান্ডসেট বিক্রির দাবি করে আসছিলো মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। অবশেষে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এলো।
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো এবং বিটিআরসি বলছে, স্মার্ট বাংলাদেশের মূল ভিত্তি স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নেন্স বাস্তবায়নে হাতে-হাতে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিকল্প নেই। সেখানে স্মার্টফোন নাগরিকদের হাতের নাগালে আনতে এই পদ্ধতি দারুণ কার্যকর হতে পারে।
বিটিআরসি প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্মতি সাপেক্ষে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার টেকশহর ডটকমকে জানান, এ বিষয়ে বিটিআরসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে।
‘এর ফলে স্মার্টফোন সহজলভ্য হবে, আরও সুলভে ইন্টারনেটও দেবে অপারেটরগুলো। দেশের স্মার্টফোনের পেনিট্রেশন বাড়বে যা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়ক হবে’ বলছিলেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার টেকশহর ডটকমকে বলেন, এ ধরনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। আমরা তাঁর সমর্থন ও পরামর্শ পাই।
‘মানুষের কাছে স্মার্টফোন না থাকলে তো ইন্টারনেট ব্যবহার করে সংযুক্ত থাকতে পারবে না। আমরা দেখছি মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তারমানে আমাকে এখনও নির্ভর করতে হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেটের উপর। ইতোমধ্যে ফোরজি পেনিট্রেশন সারাদেশে করা হয়েছে এবং এরপরে ফাইভজি। উচ্চগতির ইন্টারনেটের জন্য মোবাইল অপারেটরগুলোর কিস্তিতে দেয়া স্মার্টফোন মানুষের কাছে আরও সহজলভ্য হবে। নি:সন্দেহে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের পেনিট্রেশন বাড়বে’ বলছিলেন মন্ত্রী।
থাকছে যেসব শর্ত :
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো দুই বা এর বেশি সিমের স্লটের স্মার্টফোন দেবে। সেখানে একটি স্লটে যে অপারেটর স্মার্টফোন সে অপারেটরের সিম লকিং থাকবে। অন্য স্লটগুলোতে গ্রাহক নিজেরে পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো অপারেটরের সিম ব্যবহার করতে পারবে এবং এখানে কোনো শর্ত থাকবে না।
অপারেটরগুলো হ্যান্ডসেট আমদানি, উৎপাদন ও সংযোজন করতে পারবে না। স্থানীয়ভাবে মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হতে তারা স্মার্টফোন কিনবে।
ডাউন পেমেন্ট নেয়া যাবে সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ । কিস্তি হবে সর্বনিম্ন ৩ মাস হতে সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত।
কিস্তি শেষ হওয়ার পর বা স্মার্টফোনের দাম পরিশোধের পর লক করা সিমের স্লটটি খুলে দিতে হবে এবং গ্রাহকের স্বাধীনতা থাকবে যেকোনো সিম ব্যবহার করার।
স্মার্টফোনের দাম পরিশোধ না করে অপারেটর বদল করা যাবে না, অর্থাৎ এমএনপি করা যাবে না।
অপারেটরগুলো এখানে বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন প্যাকেজ দিতে পারবে এবং কিস্তিতে দেয়া হ্যান্ডসেটের বিস্তারিত তথ্য বিটিআরসিকে জানাবে।
সূত্র : টেকশহর ডটকম