করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) উদ্যোগে বাংলাদেশে এই প্রথম অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ‘করোনাথন-১৯’ হ্যাকাথনের তিন দিনব্যাপী (২-৪মে) অনুষ্ঠিত এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটির সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সোমবার (৪ মে) ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ। ডিআইইউর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, ডিআইইউর কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকতার হোসেন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. তৌহিদ ভুঁইয়া, করোনাথন-১৯ এর আহ্বায়ক ড. শেখ মোহাম্মদ আল্যায়ার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএসডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন।
প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় জুনিয়র ও সিনিয়র দুই ক্যাটাগরিতে। জুনিয়র ক্যাটাগরির হেলথকেয়ার বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সানি জুবায়ের এবং রানার আপ হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান তুলি। এই ক্যাটাগরির ওপেনবক্স বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম সোপি। এই টিমের সদস্যরা হলেন আল মামুন অভি, আজিজুল হাকিম ও মারুফ আহমেদ। একই বিভাগে রানার আপ হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের শিক্ষার্থী সামি খান।
সিনিয়র ক্যাটাগরির হেলথকেয়ার বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তানভির এবং রানার আপ হয়েছে ইরান থেকে অংশগ্রহণ করা দল ‘ভাইরাস হান্টার’। এই দলের সদস্যরা হলেন আহমেদ রামাজানি, আজাদেহ ও মোহাম্মদী। ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘স্মার্ট অ্যাকুয়াপনিস সিস্টেম’। দলের সদস্যরা হলেন ইফতেখার আলম, আদনান সেতু ও তানজিদ আহমেদ। একই বিভাগে রানার আপ হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে অংশ নেওয়া দল ডিজিটাল ট্রেন। দলের সদস্যরা হলেন তানজিয়া বিনতে হাফিজ, তৌফিকুল এনাম ও নাইমুল ইসলাম। অন্যদিকে ওপেনবক্স বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম রড়্গী। এই টিমের সদস্যরা হলেন আবরার মাসুম, নাসিফ জামান ও ফাহিম হাসনাইন। এই বিভাগে রানার আপ হয়েছে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দল ‘মিনিয়নস’। দলের সদস্যরা হলেন প্রশান্ত্ কুমার দাস, আনিকা তাহসিন ও আরিফা আকতার।
অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, করোনাথন প্রতিযোগিতা পুরোটাই অনলাইনে আয়োজন করে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রমাণ করে দিলো যে অলাইনে অনেক কিছুই করা সম্ভব। এই হ্যাকাথন থেকে যেসব উদ্ভাবনী আইডিয়া বেরিয়ে এসেছে সেসব বাংলাদেশের মানুষক বাঁচাতে সাহায্য করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তরুণ উদ্ভাবনী উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার স্টার্ট আপ বাংলাদেশ স্থাপন করেছে, সেখান থেকে তরম্নণ উদ্ভাবকরা সব ধরনের সহযোগিতা পাবেন।
অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় তরুণ নেতৃত্ব তৈরি করছে। তারা শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী মেধাকে উসকে দিচ্ছে। এটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। সারা দেশ লকডাউন হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের মেধা লকডাউন হয়ে যায়নি। তারা ঘরে বসেই এই হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের মেধার চর্চা করতে পেরেছে। এ ধরনের হ্যাকাথনের ফলে তরুণ শিক্ষার্থীরা দেশের সমস্যা নিয়ে ভাবার সুযোগ পায়। এতে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম তৈরি হয়।
করোনাথন-১৯ হ্যাকাথনে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর তরুন শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিজয়ী তরুণরা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তত্ত্বাবধানে করোনা মোকাবেলার প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন উপায় উদ্ভাবন করবেন এবং পুরস্কার হিসেবে পাবেন ২৫০০০ ইউএস ডলার। এই প্রতিযোগিতায় ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তাইওয়ান, নাইজেরিয়া, জাপান, মেক্সিকো, চীন, দক্ষিন কোরিয়া এবং স্বাগতিক বাংলাদেশ থেকে শতাধিক দল অংশগ্রহণ করেছিল।